বর্ষাকাল মানেই চারদিকে জমে থাকা পানি, আর সেই পানিতেই জন্ম নেয় ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা। ফলে এই সময়ে মশার উৎপাত বেড়ে যায় অনেক গুণ। চিকিৎসকরা রাতের বেলা মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন ঠিকই, কিন্তু তবুও মশা যেন নানাভাবে ঘরে ঢুকে পড়ে। তাই বর্ষাকালে শুধু বাইরে নয়, ঘরের ভেতরেও সতর্কতা প্রয়োজন।
মশা তাড়াতে আপনি বাড়ির বারান্দা, ছাদ বা জানালার ধারে রাখতে পারেন কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে মশা দূরে রাখার গাছ। এগুলো শুধু মশা দূরে রাখবে না, ঘরের শোভাও বাড়াবে। চলুন, জেনে নিই।
তুলসি-
সাধারণ তুলসির চেয়ে খাবারে ব্যবহৃত তুলসি গাছ মশা তাড়াতে বেশি কার্যকর। এই গাছের গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। গাছ যেন পর্যাপ্ত রোদ ও পানি পায়, এমন জায়গায় রাখতে হবে। না হলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।
পুদিনা-
বর্ষাকালে পুদিনা খুব সহজেই বাড়ে। শিকড়সহ একটি ডাল মাটিতে পুঁতলেই কয়েক সপ্তাহে বেড়ে উঠবে। রান্নাঘরের জানালা বা বারান্দার টবে একটি পুদিনা গাছ রাখলেই মশা দূরে থাকবে। এটি ঘরের পরিবেশকেও সতেজ রাখে।
লেমনগ্রাস-
লেমনগ্রাস বর্ষার পানিতে ভালোই বেড়ে ওঠে। এর পাতার গন্ধ মশা পছন্দ করে না। আপনি চাইলে এই পাতাগুলো চায়ের সঙ্গে ফুটিয়ে পানও করতে পারেন—সুস্বাদু ও উপকারী। মশা ও ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-জ্বর থেকে রক্ষা পেতে লেমনগ্রাস খুবই কার্যকর।
ল্যাভেন্ডার-
বাংলার জলবায়ুতে ল্যাভেন্ডার গাছে ফুল না-ও ধরতে পারে, তবে এর পাতার ঘ্রাণ মশা দূরে রাখতে যথেষ্ট। তাই ছাদবাগান বা বারান্দায় একটি ল্যাভেন্ডার গাছ রাখলে ঘরে মশার আনাগোনা অনেকটাই কমবে।
রোজমেরি-
রোজমেরি গাছ যত্নে রাখতে হয় একটু বেশি। এটি ভালোভাবে বাড়তে পর্যাপ্ত রোদ ও অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা পরিবেশ প্রয়োজন। যদি এমন পরিবেশে থাকেন, তাহলে রোজমেরি রাখলে মশা অনেকটা দূরে থাকবে। যদি গাছ রাখা সম্ভব না হয়, তবে রোজমেরি বা ল্যাভেন্ডারের এসেনশিয়াল অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
বর্ষায় মশার উপদ্রব এড়াতে শুধু স্প্রে বা কয়েল নয়, ঘরে কিছু নির্দিষ্ট গাছ রাখলে প্রাকৃতিকভাবেই মশা দূরে থাকবে। পাশাপাশি আপনার বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা এবং রাতে মশারি ব্যবহার করাও খুব জরুরি।