মেক্সিকোর জনপ্রিয় ফুটবলার হাভিয়ের ‘চিচারিতো’ হার্নান্দেজ এবার বিতর্কে জড়ালেন একাধিক নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করে। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকার এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি ক্লাউডিয়া শেইনবাউম সহ অনেকেই।
গত সপ্তাহান্তে ইনস্টাগ্রামে একাধিক ভিডিও ও রিল পোস্ট করেন ৩৭ বছর বয়সী চিচারিতো। সেখানে তিনি বলেন, ‘নারী হওয়াকে ভয় পেয়ো না, পুরুষের নেতৃত্ব মেনে নাও।
তোমরা ভুল করছো, তোমরা পুরুষত্বকে ধ্বংস করছো, সমাজকে অতিসংবেদনশীল করে তুলছো।’
এই মন্তব্যের পরপরই প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘চিচারিতো খুব ভালো ফুটবলার হতে পারে, কিন্তু নারীদের সম্পর্কে তার ধারণা অত্যন্ত নারীবিদ্বেষী। তার এখনো অনেক কিছু শেখার আছে।’
চিচারিতো বর্তমানে মেক্সিকোর ক্লাব চিভাসে খেলছেন, যদিও ইনজুরির কারণে চলতি অ্যাপারতুরা টুর্নামেন্টের প্রথম দুটি ম্যাচে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
মেক্সিকো জাতীয় দলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা (৫২ গোল) চিচারিতো ২০০৬ সালে চিভাস থেকেই পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ম্যানচেস্টার উইনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, লেভারকুসেন, ওয়েস্টহাম ও সেভিয়া হয়ে ২০২৩ সালে আবার চিভাসে ফিরে আসেন।
তার আরো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বলছেন, ‘তোমরা চাইলে পুরুষ উপার্জন করুক, কিন্তু ঘর পরিষ্কার করাকে পিতৃতান্ত্রিক দমন মনে করো... মজার বিষয়।’
আরেকটি পোস্টে বলেন, ‘নারীরা, তোমাদের শিখতে হবে কীভাবে পুরুষত্বকে সম্মান করবে।
এই ধরনের বক্তব্যের পর চিচারিতোকে জরিমানা করেছে মেক্সিকো ফুটবল ফেডারেশনের জেন্ডার ও ডাইভারসিটি কমিশন এবং চিভাস ক্লাব। ফেডারেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চিচারিতোর মন্তব্যগুলো লিঙ্গবৈষম্যমূলক স্টেরিওটাইপ প্রচার করে, যা খেলাধুলায় লিঙ্গ সমতার পরিপন্থী।’ তবে জরিমানার পরিমাণ জানানো হয়নি। ভবিষ্যতে একই ধরনের আচরণ করলে আরো কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে সতর্ক করেছে ফেডারেশন।
চিভাসের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, তারা এমন কোনো আচরণকে সমর্থন করে না, যা ‘মানুষের স্বাধীনতা, সম্মান ও পূর্ণ বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
’ যদিও ক্লাবটি চিচারিতোর নাম প্রকাশ করেনি।
চিচারিতো ২০১৯ সাল থেকে মেক্সিকো জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। কারণ, তিনি কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচের পর নিউ ইয়র্কে অনুমতি ছাড়া পার্টি আয়োজন করেছিলেন।
প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম বলেছেন, ‘আমি একজন মা, দাদি এবং গৃহিণী। কিন্তু সেই সঙ্গে আমি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ প্রধানও। নারীরা যা হতে চায়, তা-ই হতে পারে।’
সূত্র : দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
এমকে/টিএ