বেআইনি সমাবেশের ক্ষেত্রে পাঁচ ধাপে বলপ্রয়োগের নীতি গ্রহণে পুলিশ সংস্কার কমিশন কর্তৃক পরামর্শের পর তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
পুলিশ সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রথম সভার কার্যবিবরণী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৩ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বা সুপারিশ ছিল, সময়ের বিস্তর ব্যবধানে আধুনিক বিশ্বে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে যেসব প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করা হয় তা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক পাঁচভাবে বল প্রয়োগের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি আইন, ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন, ১৯৪৩ সালের বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন্সের (পিআরবি) যথাযথ অনুসরণ করে পুলিশ কর্তৃক পাঁচভাবে বল প্রয়োগের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রণীত ধাপগুলোকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী কর্তৃক বল প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে এই পদ্ধতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসরণের লক্ষ্যে আইনগত বৈধতা দেওয়ার জন্য কমিশন সুপারিশ করছে এবং এতে ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতির এবং প্রাণহানির ঝুঁকি এড়িয়ে চলা সম্ভব করা হবে।
গত ২৩ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় পুলিশ সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রথম সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ইউনাইটেড ন্যাশন্স স্ট্যান্ডার্ড পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বেসিক পুলিশ টেকনিক ম্যানুয়াল অনুযায়ী ৫ ধাপে বল প্রয়োগের বিষয়টি বাংলাদেশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বেসিক পুলিশ টেকনিক ম্যানুয়ালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ চলছে এবং তা প্রতিপালন হচ্ছে বলে পুলিশ মহাপরিদর্শক জানান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পরিষদ দপ্তরকে বাস্তবায়নকারী হিসেবে সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সভায় সংস্কার কমিশন গঠনের পটভূমি বর্ণনা করে সভাপতি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে গঠিত ১১টি কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাব সরকারের নিকট দাখিল করেছে। অনেক সংস্কার প্রস্তাব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগেই বাস্তবায়ন করতে পারে। সংস্কার প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন শুরু করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
গত ৫ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে এ সংক্রান্ত একটি পত্র বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগে পাঠানো হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে আন্তরিকতার সঙ্গে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নে অনুরোধ করেন।
সভাপতি সংস্কার কমিশনসমূহের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, ৫টি সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য বাছাইকৃত ১২১টি প্রস্তাবের মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি (মূলত ১১টি) সংস্কার প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে।
উপস্থাপিত প্রস্তাবের প্রতিটি বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উপস্থিত প্রত্যেক সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। বিস্তারিত আলাপ আলোচনা ও মতামতের আলোকে উপস্থাপিত সংস্কার প্রস্তাবসমূহ অতি দ্রুত বাস্তবায়নের নিমিত্তে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
এফপি/টিএ