নায়ক জসিমের ছেলে, ব্যান্ড ওন্ড-এর ভোকাল এ কে রাতুল আর নেই। মাত্র কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে স্তব্ধ হয়ে গেল এক প্রতিশ্রুতিশীল সংগীতযাত্রা। শনিবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর একটি জিমে হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাতুল। সেখান থেকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সংগীতপ্রেমীদের হৃদয় বিদীর্ণ করে রাতুল চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
নায়ক জসিমের তিন ছেলের মধ্যে একজন ছিলেন এ কে রাতুল। ভাইয়ের এমন অকাল প্রয়াণে বাকরুদ্ধ দুই ভাই—এ কে রাহুল ও এ কে সামী। ভাইকে শেষ বিদায় জানিয়ে রোববার সকালে বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই ভাই প্রকাশ করেন শোকাতুর হৃদয়ের কিছু চিত্র, যা ছুঁয়ে যায় অসংখ্য ভক্তের মন।
ছোট ভাই এ কে সামীর পোস্টে ছিল হৃদয়বিদারক স্বীকারোক্তি—‘আমি মাত্রই আমার ভাইটাকে সমাহিত করে এলাম।’ বড় ভাই রাহুল আরও আবেগঘন। শেয়ার করেন প্রয়াত বাবা জসিমের কোলে শিশু রাতুলের একটি ছবি। ক্যাপশনে ছোট্ট অথচ বিষণ্ন দুই শব্দ—‘একসঙ্গে থেকো’। অন্য এক ছবিতে দেখা যায়, রাহুল তার ভাই রাতুলের বুকে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছেন—এই ছবি যেন হয়ে উঠেছে দুই ভাইয়ের শেষ সংযোগের প্রতীক।
সংগীতের আকাশে রাতুল ছিলেন এক নতুন ধ্রুব তারা। ব্যান্ড ওন্ড-এর হয়ে তিনি গেয়েছেন বহু শ্রোতাপ্রিয় গান। ২০১৪ সালে প্রথম অ্যালবাম ‘১’ এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘২’ প্রকাশিত হলে, রাতুলের কণ্ঠশক্তির জন্য ব্যান্ডটি দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়। শুধু গায়ক নয়, প্রযোজক হিসেবেও রাতুল ছিলেন বিশেষভাবে সমাদৃত। দেশের রক সংগীতের বহু ব্যান্ডকে তিনি তৈরি করে দিয়েছিলেন পরিচিতি, উপহার দিয়েছিলেন স্মরণীয় অ্যালবাম।
রাতুলের মৃত্যুতে আন্ডারগ্রাউন্ড রক সংগীতজগতে নেমে এসেছে গভীর শোক। হঠাৎ করে এই নক্ষত্রপতন মেনে নিতে পারছেন না কেউই। তাঁর কণ্ঠ, সুর ও অনুরণন অনেক দিন জেগে থাকবে ভক্তদের স্মৃতিতে।
এসএন