এ সময়ে দেশের ছোট ও বড়পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। খুবই অল্প সময়ে তিনি ঈর্ষনীয় একটি অবস্থান তৈরি করেছেন শোবিজে, যা নতুনদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
টিভিসির মডেল হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা ফারিণ অল্পদিনের মধ্যেই অভিনয়ে নাম লেখান। শুরুতেই প্রধাণ নায়িকা হিসেবে কাজ করেননি, কয়েকটি নাটকে তাকে দেখা গেছে অন্য কোন জনপ্রিয় অভিনেত্রীর বান্ধবী বা দ্বিতীয় নায়িকার চরিত্রে।
তবে সাবলিল অভিনয় দিয়ে অতি দ্রুত নিজের মেধার পরিচয় দেন। এরপর থেকে তিনি একের পর এক নাটকে অভিনয় করতে থাকেন, মিষ্টি হাসির জাদুতে নাটকগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে।
ফারিণ ততোদিন শুধু রোমান্টিক নাটকের নায়িকা হিসেবেই দর্শকের মনে স্থান পেয়েছিলেন। কিন্তু গুণী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার প্রথম ওয়েব ফিল্মে (ভারতের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভের জন্য) স্ত্রী তিশাকে কাস্ট না করে ফারিণকে প্রধাণ নারী চরিত্রে নির্বাচনের পর অনেকেই অবাক হন। ফারিণও ‘লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান’ নামের সেই সিরিজের কমপ্লেক্স চরিত্রটি দারুণভাবে উপস্থাপন করে সবাইকে আরও একবার চমকে দেন।
সেই থেকে ফারিণের কাছে আসতে থাকে নানা ধরনের জটিল চরিত্র। তিনি নিজের সাধ্যমতো সেগুলো পর্দায় উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফেসবুক ফলোয়ার তৈরি হয়েছে ছোটপর্দা থেকে সিনেমার নায়িকা হওয়া তাসনিয়া ফারিণের। তার ফেসবুক ফলোয়ার ৭ মিলিয়ন। ফারিণের এতো অনুসারি হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ তার পাশের বাড়ির মেয়ে ইমেজ। তাকে দেখলে ভক্তদের খুব আপন মনে হয়।
পাশাপাশি দক্ষ অভিনয় ফারিণকে সমসাময়িক অনেকের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে। এ পর্যন্ত ফারিণকে অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দারুণ সব চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করতে দেখা গেছে।
এতো দর্শকের ভালোবাসা পাওয়ার পরও ফারিণ নাকি স্বামীর জন্য শোবিজ ছাড়তেও প্রস্তুত! এটা কোন গুজব বা ধারণা নয়। এ কথা ফারিণ নিজেই বলেছেন সাম্প্রতিক একটি পডকাস্টে। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, যেহেতু তোমার স্বামী দেশের বাইরে থাকে তার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাও এই পডকাস্টেও মাধ্যমে?
ফারিণ বলেন, ‘আমাকে সব সময় সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই। আমাকে যে কয় জন মানুষ চেনে বা আমার কাজ দেখে, আমাকে পছন্দ করে- সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাকে যদি স্বামী বা শোবিজ ক্যারিয়ার- দুইটার মধ্যে একটি বেছে নিতে বলা হয় আমি অবশ্যই আমার স্বামীকে বেছে নেব।’
প্রায় ১০ বছরের ব্যবধানে তাসনিয়া ফারিণ ও তার স্বামী
একই পডকাস্টে স্বামী শেখ রেজওয়ানের সঙ্গে ফারিণের প্রেম ও বিয়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় যা নিয়ে তিনি একেবারেই কোথাও কথা বলতে পছন্দ করেন না। এই প্রথম নিজের প্রেম নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন এই নায়িকা। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের (প্রেমের) ১০ বছর হয়ে গেছে। আমাদের সম্পর্কটা হয়েছিল না দেখেই! আমি জানি এ যুগে এমন কথা খুব অদ্ভূত শোনাচ্ছে। কিন্তু এটাই সত্য, আমি প্রেমে পড়ার আগে তার ছবিও দেখিনি।’
এরপর ফারিণ প্রেমে পড়ার গল্পটি খুলে বলেন, ‘আমি অভিনয় বা মডেলিং করার আগে থেকেই গান করতাম। ২০১৫ সালের কথা, আমি আরেকজন ইউটিউবারের সঙ্গে একটি গানের কোলাবরেশন করেছিলাম। সেই ইউটিউবারের ভিডিও আবার দেখত আমার স্বামী। আমাকে তার খুব প্রিটি আর ইন্টারেস্টিং লেগেছিল, তাই পাগল হয়ে যায় আমাকে খুঁজতে। ফেসবুকে পেয়েও যায়, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। ওর সঙ্গে আমার একজন ভালো বন্ধুর মিউচুয়াল থাকায় আমি অ্যাকসেপ্ট করি। এরপর আমাকে হাই হ্যালো গর্জিয়াস এসব মেসেজ করত, কিন্তু আমি দেখতামও না রিপ্লাইও দিতাম না। তখন আমার গানের ভিডিওতে যারা কমেন্ট করত তাদের কমেন্টের রিপ্লাই দিতাম। কারণ, রিপ্লাই দিলে তারা আরও বেশি বেশি আমার ভিডিও দেখবে। সেখানে ওর কমেন্টটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল।

সেটা আমার মাথায় গেথে গিয়েছিল। এরপর থেকেই ইনবক্সে কথা হতো। যখন আমারও তার সাথে কথা বলতে ভালো লাগা শুরু হলো তারপর তার প্রোফাইলে গিয়ে সে দেখতে কেমন সেটা দেখি। এর আগে কোনদিন তার প্রোফাইলেই আমি যাইনি। সেই থেকে প্রেম, ওই একটাই প্রেম তারপর তো বিয়ে হলো। তার ভেতরে অসীম ধৈর্য্যশক্তি আছে যা আমার খুব ভালো লাগে। আমি যেমন মাঝে মাঝে বেশিই আবেগপ্রবণ আবার কোন সময় কোন আবেগই কাজ করে না, কিন্তু ও বরাবরই ব্যালেন্সড।’
এমকে/টিকে