বিদেশে পালানো নেতাদের নির্বাচনে ফেরার পথে বাধা : জাহেদ উর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠে অনেক নেতার বিরুদ্ধে চলছে ফৌজদারি মামলা; যার কারণে তারা দেশের বাইরে পালিয়ে আছেন—এসব নেতারা দেশে ফিরে আসলেই তাদের গ্রেপ্তার ও জেল হতে পারে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলেও আইনের কারণে বাধাগ্রস্ত হবেন। যার ফলে দেশে রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রতিযোগিতায় এ ধরনের নেতাদের উপস্থিতি সীমিত হচ্ছে।

সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলেছি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে হলে প্রার্থীকে সশরীরে হাজির হতে হবে। ফলে যারা বিদেশে পালিয়ে আছে বা যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তারা এলে গ্রেপ্তার হতে পারে। যেসব নেতা এখন জেলে আছেন, তারাও কারাগার থেকেই নির্বাচন করতে পারেন কিন্তু তারা বাইরে এসে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।

তিনি অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের স্বার্থ ভারতের কাছে তুলে দিয়েছিল। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক মুনাফার জন্য দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা সংকটে পড়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অসুবিধার মুখে পড়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখনো নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল নয়। আমরা বলেছি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে এবং সেখানে যদি আওয়ামী লীগ নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে তারা রাজনীতিতে ফিরতেও পারে। আমাদের বা আপনাদের পছন্দ না হলেও আইনের চোখে যদি তারা বৈধ হয় তাহলে তারা নিজেদের নামেই রাজনীতি করতে পারবে।

জাহেদ-উর-রহমান মনে করেন, দেশে এখনো প্রায় ২০% আওয়ামী লীগ সমর্থক আছে। যদি দলটি নিষিদ্ধও হয় তারা অন্য নামে বা ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে রাজনীতি চালিয়ে যেতে পারে। পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতারাই তখন নতুন নামে সামনে আসবে। আমরা তখন তাদের থামাবো কীভাবে? বাস্তবতা হলো, আমার চোখে সেটার কোনো কার্যকর উপায় নেই।

সুতরাং, এখন যে আলোচনা চলছে—আওয়ামী লীগ হয়তো কৌশল পরিবর্তন করে জাতীয় পার্টির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নির্বাচন করতে পারে। তারা লাঙ্গল প্রতীকে অংশ নিতে পারে। তবে প্রথম সারির আওয়ামী লীগ নেতারা হয়তো নির্বাচন করতে পারবে না কারণ তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, তারা পালিয়ে আছে।

রাষ্ট্রপতি ছবি সরানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর রাষ্ট্রপতিকে সরানোর আলোচনা একাধিকবার উঠেছে। কিছু মহল চেষ্টা করেছে বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে সেখানে নিজেদের পছন্দের কাউকে বসাতে। আমি সম্প্রতি একটি ছবি সরিয়ে রাখার ঘটনাকে এই প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুক্ত করে দেখতে চাই। 

আমি বলতে চাই, এ ধরনের উদ্যোগ দেশকে অস্থিতিশীল করতে পারে। আমরা এটিকে সন্দেহের চোখেই দেখব। ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা যতই বলা হোক, বাস্তবতা হলো—যেহেতু এমন প্রচেষ্টা আগে হয়েছিল তাই এবারও হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। বাংলাদেশ বর্তমানে কোনো রকম অস্থিতিশীলতা সহ্য করার অবস্থায় নেই। তাই এসব বিষয়ে সতর্কতা ও আলোচনা খুবই জরুরি।


ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিভিন্ন থানায় পুলিশ টাকা ছাড়া কথা শোনে না : সারজিস Dec 01, 2025
img
আমার সঙ্গী অর্ধ-ভারতীয়, ছেলের নাম শেখর: ইলন মাস্ক Dec 01, 2025
img
নেইমারের ‘অদ্ভুত অভ্যাস’ ফাঁস করলেন সাবেক সতীর্থ Dec 01, 2025
img
পরিচালকের অপমানে কেঁদেছিলেন অভিনেতা অক্ষয় Dec 01, 2025
img
বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা Dec 01, 2025
img
ভারতের স্বার্থ রক্ষা ও ক্ষমতা দীর্ঘ করতে পিলখানার হত্যাকাণ্ড ঘটান হাসিনা: রাকিন আহমেদ Dec 01, 2025
img

হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক

দুর্নীতি বর্তমানে রোগে পরিণত হয়েছে Dec 01, 2025
img
কঠোর নির্দেশনা মাউশির Dec 01, 2025
img
দুর্দান্ত স্মৃতির জন্য ধন্যবাদ, আন্দ্রে : শাহরুখ খান Dec 01, 2025
img
আমরা অনেক লাকি, লিটনকে ৭৫ লাখে পেয়েছি: শানিয়ান তানিন Dec 01, 2025
img
গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ গড়তে পারবে বিএনপি: মির্জা ফখরুল Dec 01, 2025
ভারত থেকে স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে Dec 01, 2025
img
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা কমবে, বাড়বে রাতের Dec 01, 2025
img
শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার দেখাতে নির্দেশ Dec 01, 2025
img
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি : শেখ হাসিনা, রেহানা, টিউলিপের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা Dec 01, 2025
img
আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত 'দীর্ঘ সময়' বজায় রাখার ঘোষণা ট্রাম্পের Dec 01, 2025
img
অভিনেত্রী ছাড়াও নতুন পরিচয়ে শ্রদ্ধা কাপুরের Dec 01, 2025
img
মাল্টিক্লাউড নেটওয়ার্কিং সেবা চালু করল অ্যামাজন-গুগল Dec 01, 2025
img

সিনেটর খুররম জিশান

‘আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে ইমরান খান বেঁচে আছেন’ Dec 01, 2025
img
সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমালো পাকিস্তান Dec 01, 2025