গাজার পরিস্থিতি বিশ্বের ইতিহাসের এক বেদনাদায়ক সময়: মাইকেল ডি. হিগিন্স

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বেআইনি কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি. হিগিন্স। তিনি বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে যেখানে কোনও জবাবদিহিতা নেই।

সোমবার (২৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

গত শনিবার আইরিশ টেলিভিশন আরটিই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট হিগিন্স বলেন, “আমরা এক ধরনের জবাবদিহিতাহীন অবস্থায় আছি”। তিনি গাজার পরিস্থিতিকে বিশ্বের ইতিহাসের এক “বেদনাদায়ক সময়” বলেও উল্লেখ করেন।

হিগিন্স বলেন, এখন এমন এক অস্বাভাবিক মুহূর্ত চলছে যেখানে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রকাশ্যে বেআইনি কাজের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছেন না। তিনি আরও বলেন, “পশ্চিম তীর ও গাজার মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার যে প্রস্তাব উঠেছে, সেটিও আসলে জবাবদিহিতাহীনতার প্রতিফলন। এই অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।”

প্রযুক্তির “অজবাবদিহিমূলক ভূমিকা” নিয়েও তিনি সতর্ক করে বলেন, এর মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্ত্র প্রতিযোগিতার দিকে গড়াতে পারে, যেখানে মানবিক মূল্যবোধ একেবারেই অগ্রাহ্য হবে। হিগিন্স বলেন, “গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তাকে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত রাজনৈতিক সমস্যাগুলো থেকে মনোযোগ সরানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা যায় না।”

তিনি মনে করিয়ে দেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘চ্যাপ্টার সেভেন’ভুক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই প্রয়োজনে বলপ্রয়োগসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সামরিক অভিযান পুরো অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়া গাজায় যুদ্ধ চালানোর অভিযোগে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গণতন্ত্র ফেরানোর সংগ্রাম চলমান : তারেক রহমান Dec 06, 2025
img
অভিনয় ছেড়ে দ্বীনের পথে অভিনেত্রী মৌ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট, পরে ডিলিট! Dec 06, 2025
img
আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামবো: লিওনেল স্কালোনি Dec 06, 2025
img
চিরকাল বাংলার প্রতি আমার একটা আলাদাই টান: রুদ্রনীল ঘোষ Dec 06, 2025
img
গাজীপুরে প্রথমবারের মতো জামায়াতের নির্বাচনী সভা Dec 06, 2025
img
২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের সহজ গ্রুপে আর্জেন্টিনা Dec 06, 2025
img
তৃতীয় বারের মতো পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা Dec 06, 2025
img
রাজ চক্রবর্তীর ক্যারিয়ারের প্রারম্ভিক সংগ্রামের গল্প Dec 06, 2025
img
দিল্লির বিয়েতে কনের প্রশ্নে হাস্যরসের সঙ্গে জবাব দিলেন শাহরুখ খান Dec 06, 2025
img
খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসবে আজ Dec 06, 2025
img
আমি এই মুহূর্তে চাই দেবের গায়ে অনেক প্রজাপতি বসুক: জিৎ গাঙ্গুলি Dec 06, 2025
img
পুতিনের নৈশভোজে কোনো ধরনের মাংস রাখলো না ভারত Dec 06, 2025
img
রমেশ তৌরানের মুভি থেকে সরে দাঁড়াল সাইফ আলি খান Dec 06, 2025
img
আগারগাঁওয়ে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ Dec 06, 2025
img
আজ শুষ্ক আবহাওয়ায় ঢাকায় তাপমাত্রা নেমে ১৮ ডিগ্রিতে Dec 06, 2025
img
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৩য় অবস্থানে রাজধানী ঢাকা Dec 06, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মালদ্বীপে দোয়া মাহফিল Dec 06, 2025
img
কাজে ব্যস্ত থাকলেই কষ্ট ছুঁতে পারে না: নীলাঞ্জনা Dec 06, 2025
img
ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনেই খালেদা জিয়ার রোগের সূচনা : মির্জা ফখরুল Dec 06, 2025
img
পাশের দেশ থেকে চিন্তা করছেন দেশে ঢুকবেন সেটা হবে না: জয়নাল আবদীন Dec 06, 2025