ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত শিশু মহিমার খোঁজ এখনো কেউ নেয়নি। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেডেই সময় কাটছে তার। এই মুহূর্তে সদর হাসপাতালের নার্সরাই তার আপনজন। সত্যিকারের আপনজন কারা সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য কেউ দিতে পারেনি। মর্মান্তিক হৃদয় বিদরক এ ঘটনায় নেট দুনিয়াসহ বিভিন্ন মহলে হাহাকার চলছে।
তবে ইতোমধ্যে শিশুটির ফুফু ও চাচা দাবি করে দু'জন ব্যক্তি হাসপাতালে এলেও তাদের কাছে মহিমাকে এখনই হস্তান্তর করা হচ্ছেনা বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জানা গেছে, আড়াই বছর বয়সী ওই শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তির সময় কর্তৃপক্ষ তার নাম দিয়েছে মহিমা আক্তার। একটু সুস্থ হওয়ার পর থেকে হাসপাতালের বেডে বসে অবাক-ভয়ার্ত চোখে খুঁজে ফিরছেন স্বজনদের। কিন্তু কে মা কে তার বাবা সে সন্ধান কেউ জানেনা। হাসপাতালের নার্সরাই এখন তার দেখভাল করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে আহত রাহিমা আক্তার নামের এক বৃদ্ধা ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। রাহিমা চাঁদপুরের সাতিরাশির বাসিন্দা। তখন তিনি এই শিশুর নাম মহিমা বলে জানান। তার বাবার নাম মঈন উদ্দিন এবং চাঁদপুরের কাকলী তিতাসের বাসিন্দা বলে জানালে রেজিস্টার্ড বইয়ে সেটিই উল্লেখ করা হয়।
শওকত হোসেন জানান, শিশুটির কপালের বাম পাশ থেকে মাথার পেছন অংশ পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। কপালে সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে আছে।
সোমবার রাত পৌনে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি সংঘর্ষে পড়ে। উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মাঝামাঝি বগিতে ঢুকে পড়ে তূর্ণা নিশীথা। এসময় ১৬ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক। আহতদের উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার ও শিক্ষানবিশ নার্স তাহরিমা আক্তার বলেন, শিশুটিকে নার্সদের কক্ষে রাখা হয়েছে। কারণ, মানুষ ভিড় করছে। শিশুটি একটু পর পর শুধু বাইরে যাবে বলে জানায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার এনামুল হক বলেন, একজন নারী নিজেকে শিশু মহিমার ফুফু এবং এক ব্যক্তি নিজেকে এই শিশুর চাচা বলে দাবি করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বলেছে, শিশুটির বাবা-মাকে নিয়ে আসতে। প্রকৃত অভিভাবক ছাড়া অন্য কারও কাছে এই শিশুকে হস্তান্তর করা হবে না।
টাইমস/এমএস