অন্তর্বর্তী সরকার কি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়, প্রশ্ন তুললেন কনক সরওয়ার

সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার বলেছেন, সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরের মধ্যে প্রথম তিন মাসে দায়িত্ব ছিল ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনে মাঠে দায়িত্ব পালনকারী সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি তালিকা বের করা এবং তাদের পরবর্তী নির্বাচনে সকল ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা। কিন্তু বিষয়টি ইন্টেরিমের মাথায় ঢুকেনি। এখন তারা সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের ভাই কাজী জিয়াউদ্দিনকে প্রধান সমন্বয়ক বানিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।


নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।

কনক সরওয়ার বলেন, কাজী জিয়াউদ্দিন তার ভাই হাবিবুল আউয়ালের বদৌলতে ১৫ বছর হাসিনার সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। তিনি একটি মাইলফলক নির্বাচন করার ঘোষণা দিচ্ছেন। এগুলো হচ্ছে বুকলেট ভিডিও-অডিও কনটেন্ট। এগুলো তারা তৈরি করেছেন।

এই অডিও-ভিডিও বুকলেট বানাতে, প্রশিক্ষণ দিতে নিশ্চয়ই খোঁজ নিয়ে দেখেন, এর মধ্যে শত কোটি টাকার হয়তো লেনদেন হয়ে গেছে। শত কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন, নির্বাচন কমিশন ড্রোন কিনবে। ড্রোন দিয়ে ভোটের কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করবে।

নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী কেন্দ্রে যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের বডি ক্যামেরা দেবে। অর্থাৎ পুরা টাকা খাওয়ার ধান্দা।

কনক সরওয়ার আরো বলেন, বিজিবি এখন যিনি প্রধান আছেন, তার বিষয়ে নানা অভিযোগ। জুলাই বিপ্লবের সময় তার নির্দেশে তার বাহিনী যে গুলি চালিয়েছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে কি ইন্টেরিম কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে? অর্থাৎ ইন্টেরিমের মুরুব্বীরা বন্দুক বাহিনীকে আসলে ভয় পাচ্ছে। তারা খুব ভয় পাচ্ছে যে বন্দুক বাহিনী যদি আবার বন্দুক ধরে বসে।
এই ভয়ে তারা কোনো ধরনের পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে না।

জাতীয় পার্টির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জাতীয় পার্টির প্রসঙ্গটা কিন্তু আমরা এনেছিলাম। কিন্তু জাতীয় পার্টিকে নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

রাজবাড়ীতে কবর থেকে লাশ তুলে পোড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি মারা গেছে সে যে বিশ্বাসী হোক, নিজেকে যাই দাবি করুক, তার মৃত্যুর পরে কবর থেকে লাশ তুলে এনে রাস্তায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া পৃথিবীর কোনো ধর্মগ্রন্থ বা কোনো কিছুই সমর্থন করে না। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী রাজপথে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে আছে। পুলিশ আছে, র‌্যাব আছে। পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী গত কয়েকদিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। আমাদের এনএসআই, ডিজিএফআই, এসবি, ডিবি অসংখ্য বাহিনী আছে। এর বাইরেও নাম না জানা অনেক ইনফর্মার সোর্স অনেকভাবে কাজ করেন। এই ঘটনাটা কেন আগে চেক দেওয়া হলো না? পুরো পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশকে প্রজেক্ট করার কি চেষ্টা চলছে? যে এরা কবরের থেকে লাশ তুলে সেই লাশের আগুন ধরিয়ে দেয়। এটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে করার সুযোগ করে দেওয়া হলো? একটি অরাজক অবস্থা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দেখানোর জন্য।

তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জামাতের সমাবেশে পিটিয়ে মেরে মরদেহের ওপরে উল্লাসের লগি বৈঠার যে ছবি দেখিয়ে ওয়ান ইলেভেনের পথ সুগম করা হয়েছিল, সেরকম কি কোনো আবহ তৈরি করার চেষ্টা চলছে?

তিনি বলেন, আমাদের ইন্টেরিম মুরুব্বিরা আসলে কি বুঝতেছে, কি করতেছে না করতেছে, বুঝতেছি না। এ রকম পরিস্থিতিতে আদৌ নির্বাচন সম্ভব কিনা? বিএনপি নির্বাচন নির্বাচন করছে কিন্তু সার্বিক যে পরিস্থিতি সে পরিস্থিতিতে সুষ্ঠ নির্বাচন কি সম্ভব?

জাতীয় পার্টিকে বিটিম হিসেবে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। জাতীয় পার্টির মধ্যেযুক্ত আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির ব্যানারে নির্বাচন করাবে। তাদের টাকা আছে, তাদের যে সমর্থকরা এখনো আছে সবাই মিলে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে। জাতীয় পার্টি সরকারেও ভাগ বসাবে। কোয়ালিশন সরকারের দিকে হয়তো নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার।

পিএ/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শ্বাসরুদ্ধ অভিযানের বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা Dec 12, 2025
img
মেট্রোরেল নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলবে: ডিএমটিসিএল Dec 12, 2025
img
মোহাম্মদপুর-মগবাজারে পৃথক ককটেল বিস্ফোরণ Dec 12, 2025
img
ঢাকায় আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের বিক্ষোভ দিবস অনুষ্ঠিত Dec 12, 2025
img
ফেসবুকের গল্পে নতুন রূপ পেয়েছে অহনার ‘পতন’ Dec 12, 2025
img
শুধু তফসিল ঘোষণা করলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এমন ভাবার সুযোগ নেই: গোলাম পরওয়ার Dec 12, 2025
img
মালদ্বীপ প্রবাসীদের নির্বাচনী ডাকসেবা সহজের লক্ষ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত Dec 12, 2025
img
স্কুলে ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি নিয়ে সারজিসের মন্তব্য Dec 12, 2025
img
নতুন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন রিজওয়ানা হাসান Dec 12, 2025
img
জাতীয় নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের শুভেচ্ছা মিছিল Dec 12, 2025
img
অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন ২৭০৬ জন Dec 12, 2025
img
ইলেক্টিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে খালেদা জিয়াকে, চলছে ডায়ালাইসিস Dec 12, 2025
img
কর্মকর্তাদের বদলি-ছুটিতে লাগবে ইসির সম্মতি Dec 12, 2025
img
সুদানের যুদ্ধরত পক্ষগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে জাতিসংঘ: মহাসচিব Dec 12, 2025
img

বিজয় দিবস প্রদর্শনী ম্যাচ

সৌম্যের বদলি নাইম, স্কোয়াডে সুযোগ পেলেন রিপন-রাকিবুলরা Dec 12, 2025
img

নারী ক্রিকেট

বিসিবিতে লিখিত অভিযোগ জমা দিলেন জাহানারা Dec 12, 2025
img
তফসিল ঘোষণার দিনেই পদত্যাগের বার্তা দিলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন Dec 11, 2025
img
কালো শাড়িতে নজর কাড়লেন পূর্ণিমা Dec 11, 2025
img
কক্সবাজারে নির্মাণাধীন রানওয়ে সরাতে বিআইডব্লিউটিএর সুপারিশ Dec 11, 2025
img
বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হবে: নিপুণ রায় Dec 11, 2025