ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব

বাজেট ও ঋণ সংকটে টালমাটাল ফ্রান্স

বাজেট ঘাটতি ও ঋণ সংকটে টালমাটাল ফ্রান্স। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বিরোধী দলগুলো।

এছাড়া জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকারও অনাস্থা ভোটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিদেনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে। দেশটির অতি-বামপন্থি দল ফ্রান্স আনবোড (এলএফআই)-এর নেতা জঁ-লুক মেলঁশো শনিবার জানিয়েছেন, বিরোধী দলগুলো প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেছে।

লিল শহরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেলঁশো আরও বলেন, “ওনার (ম্যাক্রোঁ) এখন চলে যাওয়া উচিত।”

গাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দল যদি ক্ষমতায় থাকত, তবে ফরাসি নৌবাহিনী মানবিক সহায়তা বহনকারী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জাহাজগুলোকে গাজা উপকূলে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিত।

মেলঁশো আরও দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকার সোমবার জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে টিকে থাকতে পারবে না। তিনি এ সম্ভাবনাকে আখ্যা দেন “জনগণের বিজয়” হিসেবে।

এদিকে জাতীয় পরিষদে সোমবারের অনাস্থা ভোটকে সামনে রেখে ফ্রান্সে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

গত জুলাই মাসে ২০২৬ সালের বাজেট কাঠামো প্রকাশ করেছিলেন বাইরু। এতে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো (৫১ বিলিয়ন ডলার) সাশ্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে, যা ফ্রান্সের বিপুল ঋণ কমানোর প্রচেষ্টার অংশ। বর্তমানে দেশটির ঋণ জিডিপির ১১৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি অন্যতম সর্বোচ্চ, যা বর্তমানে ৫.৮ শতাংশ। দেশটি এখন “অতিরিক্ত ঋণের দ্বারপ্রান্তে” রয়েছে বলে সতর্ক করে বাইরু সংসদ সদস্যদের প্রতি “অরাজকতার পরিবর্তে দায়িত্বশীলতার” পথ বেছে নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে বামপন্থি এলএফআই, ডানপন্থি ন্যাশনাল র‌্যালি (আরএন) এবং সমাজতান্ত্রিকরা সরকারের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ফরাসি রাজনীতিতে বাজেট নিয়ে মতবিরোধ দীর্ঘদিনের অস্থিরতার কারণ হয়ে আসছে। গত বছর ২০২৫ সালের বাজেট নিয়ে সমঝোতা ব্যর্থ হওয়ার পর বাম ও ডানপন্থিদের একজোটে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ডিসেম্বর মাসে মিশেল বার্নিয়ের সরকার পতন হয়েছিল।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাড্ডায় কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট Dec 21, 2025
img
হাদির নিথর দেহ জন্মভূমিতে না নেওয়ায় মর্মাহত এলাকাবাসী Dec 21, 2025
img
পথদুর্ঘটনায় আহত নোরা, তবু চিকিৎসকদের কথা না শুনে ছুটলেন কোথায়? Dec 21, 2025
img
৪১ বছর বয়সে ফের ইউরোপিয়ান ফুটবলে চিয়াগো সিলভা Dec 21, 2025
img
শীত নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা Dec 21, 2025
img
ফেরি থেকে ট্রাকসহ ৫ যান ধলেশ্বরী নদীতে, ৩ নিথর দেহ উদ্ধার Dec 21, 2025
img
চাকরিতে যোগ দিলেন না ভারতে হিজাব টেনে খুলে দেয়া সেই নারী চিকিৎসক Dec 21, 2025
img
প্রিয় হাদি, তুমি থাকবে সব বাংলাদেশির বুকের ভেতর : জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা Dec 21, 2025
img
হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়া সেই যুবক আটক Dec 21, 2025
img
ভোটের সময় ৫ দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী Dec 21, 2025
img
যে যেভাবেই বলেন না কেন, আমি নির্বাচন দেখি না : জিল্লুর রহমান Dec 21, 2025
img
আগুনে পুড়ে বিএনপি নেতার মেয়ের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক Dec 21, 2025
img
গোপালগঞ্জে সাংবাদিক ডেকে আরও ১০ আ.লীগ কর্মীর পদত্যাগ Dec 21, 2025
img
ওসমান হাদিকে নিয়ে ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২ Dec 21, 2025
img
ন্যায়বিচারের পথ বন্ধ, রাজপথেই হবে ফয়সালা : ইমরান খান Dec 21, 2025
img
বিপিএল শুরুর সময়ে পরিবর্তন Dec 21, 2025
img
বিশ্ববাজারে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম Dec 21, 2025
img
এ কে খন্দকারের জানাজা রোববার, অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা Dec 21, 2025
img
শহিদ ওসমান হাদির কবর দেখতে মানুষের ভিড়, রাতভর প্রহরায় থাকবে পুলিশ Dec 21, 2025
img
ওসমান হাদির জানাজা-দাফন শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ডিএমপির কৃতজ্ঞতা Dec 20, 2025