বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেন। সেখানে সফরকালে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন, মতবিনিময় করেন সাংবাদিকদের সঙ্গেও।
সম্প্রতি অনলাইন সংবাদমাধ্যম জেটিও -এর ‘মেহেদি আনফিল্টার্ড’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। সেখানে তাকে নানা প্রশ্ন করেন আল জাজিরার সাবেক সাংবাদিক মেহেদি হাসান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়।
এক প্রশ্নে মেহেদি হাসান বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পেরিয়েছে কিন্তু এখনো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। যদিও সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে, দেশের অনেক মানুষ তা দ্রুত চাইছে আগামীকাল নয়, এখনও নয় ছয় মাস পরে নয়। সমালোচকরা মনে করছেন, নির্বাচনে এত বিলম্ব জনমতের অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করেছে; সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ কেন ১৮ মাস সময় নিচ্ছে?
জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আপনি বলছেন যে জনগণ বলছে এত সময় লাগছে কেন। তবে জনগণ এটাও বলছে যে আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকুন। ১০ বছর থাকুন। ৫০ বছর থাকুন। জনগণ এসবও বলছে যে, আপনিই থাকুন। সবাই যার যার মতো বলছে। আমরা কারও কথায় কাজ করছি না।
তার কথায়, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান কাজ রয়েছে: সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। শুধু নির্বাচন করে পুরানো কাঠামো রেখে দিলে দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে তাই প্রথমে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। এ সরকার শুধু নির্বাচন করাতে নয়, ফ্যাসিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলার লক্ষ্যে কাজ করছে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে।
এ সময় সাংবাদিক মেহেদি হাসান পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনারা তো একটি অস্থায়ী সরকার। বড়বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কি নির্বাচিত সরকারের নয়? জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা বলেছি আমাদের তিনটি কাজ রয়েছে এবং সেটাই করব, এরপর আমরা সরে যাব। কেউ অস্বীকার করছে না যে নির্বাচিত সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বর্তমানে যেটুকু প্রয়োজন, সেটা আমাদেরই করতে হবে। তাই এই সময়টি মূলত কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য ব্যয় হচ্ছে।
এসএস/টিএ