মাত্র তিন বছরের স্বল্প অভিনয়জীবনে বলিউডের সুপারস্টারদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন দিব্যা ভারতী। তেলুগু সিনেমা দিয়ে হাতেখড়ি, তারপর হিন্দি ছবিতে একের পর এক হিট ‘দেওয়ানা’, ‘শোলা অর শবনম’, ‘আন্দাজ’, ‘দিল কা কেয়া কসুর’ শাহরুখ খান, সঞ্জয় দত্ত, ঋষি কপূরের মতো তারকাদের বিপরীতে কাজ করে রাতারাতি নব্বই দশকের ‘ক্রাশ’ হয়ে ওঠেন তিনি।
১৯৭৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ে জন্ম নেন দিব্যা। পড়াশোনা নবম শ্রেণি পর্যন্ত হলেও স্কুলজীবন থেকেই তিনি মডেলিংয়ে যুক্ত ছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৯০ সালে তেলুগু ছবি ‘বোবিলি রাজা’ দিয়ে সিনেমা যাত্রা শুরু করেন, বিপরীতে ছিলেন দগ্গুবতী ভেঙ্কটেশ।
হিন্দি ছবিতে অভিষেক হয় ১৯৯২ সালে ‘বিশ্বাত্মা’ ছবির মাধ্যমে। এরপর একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করে দ্রুত বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের কাতারে উঠে আসেন। সেই সময়ে শাহরুখ খানের সঙ্গে কাজ করা তাকে বিশেষভাবে আলোচনায় নিয়ে আসে।
১৯৯২ সালে প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং শোনা যায়, ১০ মে মুম্বাইয়ে গোপনে বিয়ে হয়। পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বা সংবাদমাধ্যম জানেননি।
দিব্যার জীবনশৈলী আর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়েও অকাল মৃত্যু ঘটে ১৯৯৩ সালের ৫ এপ্রিল। মুম্বাইয়ের ভার্সোভায় পাঁচতলা অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দা থেকে পড়ে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন, মদ্যপ অবস্থায় বারান্দার রেলিংয়ের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি; হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যান। বাড়িতে কিছু বন্ধু উপস্থিত থাকলেও পাশে কেউ ছিলেন না। হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
পুলিশের তদন্তে এই মৃত্যু দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, বলিউডে বহুজন তা মানতে নারাজ। অনেকে মনে করেন, এটি পরিকল্পিত খুনও হতে পারে। সাংবাদিক ও লেখক ট্রয় রিবেইরো তাঁর একটি বইয়ে দিব্যার রহস্যমৃত্যুর নানা অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন। বইয়ে উল্লেখ আছে দিব্যার বাবার মন্তব্য “ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলল!” যা পরিবারে বিভাজন তৈরি করেছিল।
বহু প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দিব্যার দ্রুত উত্থান, নামী পরিচালকদের সঙ্গে চুক্তি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্ভাব্য সংযোগ নিয়ে মৃত্যুর রহস্য আজও বলিউডে আলোচনার বিষয়। দিব্যা ভারতীর অকাল বিদায়ের ৩২ বছর কেটে গেলেও এই রহস্যের সমাধান এখনও মেলেনি।
এমকে/এসএন