ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা, নিহত অন্তত ৫

এক রাতেই রাশিয়ার তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে অন্তত পাঁচজন নিহত এবং হাজারো মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নিহতদের মধ্যে লভিভের লাপাইভকা গ্রামে একই পরিবারের চারজন এবং ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী রয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভসহ জাপোরিঝিয়া, ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক, চেরনিহিভ, সুমি, খারকিভ, খেরসন ও ওডেসা অঞ্চলে হামলা চালায় রাশিয়া।

হামলার বিষয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া এক রাতে ৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ৫০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে।’ এইদিকে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর দাবি করে, রাশিয়ার মোট ৫৪৯টি হামলার মধ্যে ৪৭৮টি ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইউক্রেনের লভিভের আঞ্চলিক প্রধান ম্যাকসিম কোজিটস্কি জানান, ২০২২ সালের পর এটাই ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় আক্রমণ। প্রায় ১৬৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শনাক্ত করা হয়েছে। হামলায় লভিভে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়, বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।

এছাড়া ইউক্রেণের জাপোরিঝিয়ায় একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাতের পর ৭৩ হাজারের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর ইভান ফেডোরভ। ওই হামলায় একজন নারী নিহত ও ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ কয়েকজন আহত হন।

হামলার পর ইউক্রেনের প্রতিবেশী পোল্যান্ড নিজস্ব আকাশসীমা সুরক্ষায় যুদ্ধবিমান ও ন্যাটোর মিত্রবাহিনী মোতায়েন করেছে। পোলিশ অপারেশনাল কমান্ড জানায়, আকাশ প্রতিরক্ষা ও রাডার সিস্টেম সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনায় ‘ব্যাপক সফল হামলা’ চালিয়েছে। অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এই আকাশ সন্ত্রাস রুখতে আরও কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।’

রাশিয়ার এই হামলা আসে এমন সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে পাল্টা হামলার সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্কসহ ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়াও অন্তর্ভুক্ত।

টিজে/টিকে


Share this news on:

সর্বশেষ

img
শাট ডাউনের মেয়াদ বাড়তে থাকলে সরকারি কর্মীদের ব্যাপক ছাঁটাই হতে পারে: হোয়াইট হাউস Oct 06, 2025
img
হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে ঢাকায় পৌঁছেছেন হামজা চৌধুরী Oct 06, 2025
img
এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না: সাংবাদিক ইলিয়াস Oct 06, 2025
img
শেখ সাদির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন পরীমনি Oct 06, 2025
img
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল ১.৫ শতাংশ Oct 06, 2025
img
এশিয়ার পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নের অগ্রদূত বাংলাদেশ: রোসাটম Oct 06, 2025
img
জ্বালানি তেলের নতুন বাজার খুঁজে পেল রাশিয়া Oct 06, 2025
img
নাহিদের আখের গোছানোর অভিযোগে কারা রয়েছেন, প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের Oct 06, 2025
img
সেফ এক্সিট খুঁজতে উপদেষ্টাদের কষ্ট করতে হবে না : রুমিন ফারহানা Oct 06, 2025
img
‘বাপ-বেটা দুজনেই পাগল’, আরিয়ান খান প্রসঙ্গে করণ জোহর Oct 06, 2025
img
হত্যা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি Oct 06, 2025
img
ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশি দূতের পরিচয়পত্র পেশ Oct 06, 2025
img
আঘাত নয়, ভালোবাসা নিয়েই বিদায় নিতে চাই : তাহসান Oct 06, 2025
img
ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ Oct 06, 2025
img
যেসব মার্কা হাসির খোরাক জোগায় তা ইসির তালিকায় থাকতে পারে না: সারজিস Oct 06, 2025
img
পিআর এর নামে একটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে চায়: সরোয়ার আলমগীর Oct 06, 2025
img
গাজা যুদ্ধ বন্ধে সবাইকে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেয়ার আহ্বান ট্রাম্পের Oct 06, 2025
img
ভারতে হাসপাতালে আগুন, ৬ রোগীর মৃত্যু Oct 06, 2025
img
নেপালে ভারী বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় নিহত ৪৭ Oct 06, 2025
img
ইনশাআল্লাহ দ্রুতই দেশে ফিরে আসব : তারেক রহমান Oct 06, 2025