ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা শুধু দুনিয়ার সফলতা চাই না, উভয় জগতের সফলতা চাই। রাসুল (সা.) বিদায় হজের সময় আমাদেরকে কুরআন এবং সুন্নাহ আকড়ে ধরতে বলেছিলেন। আমরা রাজনৈতিক জীবন, সামাজিক জীবন, সাংস্কৃতিক জীবন সর্বত্র জায়গায় কুরআন আর সুন্নাহ আকড়ে ধরলেই সফলতা আসবে। আমরা কুরআনের প্রত্যকটা লাইন নিয়ে যত বেশি চিন্তা করব ততো বেশি সমৃদ্ধ হবো। ইসলামকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে আবার একটি পুনর্জাগরণ ঘটবে। আবার একটি ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০অক্টোবর) সকাল ১০টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আপনারা শুধু নিজের স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। মা-বাবাদের স্বপ্ন রয়েছে। শিক্ষকদের স্বপ্ন রয়েছে। এইগুলোকে আপনাদেরকে ধারণ করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আপন করে নিজের মতো করে গড়ে সফলতার দারপ্রান্তে পৌঁছাতে হবে। জ্ঞান মানে হলো আলো। এই আলোর মানে লাইট নয়। বরং মানুষের মধ্যে যে পশুত্ব রয়েছে তা দূর করে মনুষত্ববোধ জাগ্রত করা। আপনাদের মধ্যে যে প্রজ্ঞা, ফিতরাত রয়েছে সেগুলোকে জাগ্রত করে সমাজকে আলোকিত করার জন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয়। আপনাদের সকল জ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য হতে হবে মানুষের জন্য এবং কল্যাণের জন্য।
ছাত্ররাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ছাত্র রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন চাই। আগে চলেছে শুধু গুম খুন রাহাজানি হত্যার রাজনীতি। এগুলো আর আমরা চাই না। আগে ধর্ষণে সেঞ্চুরি করে তা আবার প্রচার করে বেড়ানো হতো। এটাই হলো জাহেলিয়াতের রাজনীতি। এটা আর আমরা চাই না। কোনো গোলামিতন্ত্র আমরা চাই না। ইসলাম আমাদের এটা শেখায় না। যে রাজনীতি রাষ্ট্রের কল্যাণ করবে, শিক্ষার্থীদের কল্যাণ করবে, ক্যাম্পাসের সমস্যা আইডেন্টিফাই করে সমাধান বের করতে পারবে, সেই রাজনীতি আমরা চাই।
দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আগামীর দিন শুধু সম্ভাবনার। আমাদের প্রচুর মানবসম্পদ রয়েছে। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের অনেক খনিজ সম্পদ রয়েছে। আমাদের যতো সম্পদ রয়েছে এগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা তেমন ভাবে না। এগুলো নিয়ে ভাবার মতো নেতৃত্ব আমাদের দরকার। আমাদের দেশ নদীমাতৃকতা নিয়ে গড়ে উঠেছে। আমরা এই নদীগুলোকে একটা সুন্দর পর্যটন স্থানে পরিণত করতে চাই। দেশকে সফলতার সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে যেতে চাই।
নবীন বরণের বিষয়ে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের তনুশ্রী রায় বলেন, আগের অন্যান্য অরিয়েন্টেশনের থেকে ছাত্রশিবিরের আয়োজিত নবীন বরণ অনেক ইউনিক ছিল। বিষেয় করে গিফটের বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তাদের সকল কার্যক্রম শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে, ভাইদের কথাবার্তা ভালো লাগছে।
কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী অন্বেষা দেবনাথ বলেন, আজকের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠান খুবই ভালো লাগছে। এখানে সুন্দর অ্যারেঞ্জমেন্টে গিফট ও খাবার দেওয়া হয়েছে। উপহার হিসেবে বই, কলম, চাবির রিংসহ নানা আকর্ষণীয় উপহার দিয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্য শুনে শিবিরের প্রতি থাকা ভুল ধারণা পরিবর্তন হয়েছে।
ইবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক আলী আফসার হামজা ও প্রকৌশল অনুষদের সভাপতি শোয়াইব আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু ইউসুফ, সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিক সম্পাদক হাফেজ আবু মুসা, কেন্দ্রীয় ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া, ইবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী, অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসএস/টিএ