আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগলিক অখণ্ডতার প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে আবারও দাবি করেছে নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এদিনে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হয়, পাকিস্তান অভিযোগ করছে যে ভারত সমর্থিত খারেজিরা আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
জবাবে জয়সওয়াল বলেন, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে আমার পূর্ববর্তী ব্রিফিংয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছিলাম। আফগানিস্তান তাদের নিজস্ব ভূখণ্ডের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগ করছে বলে পাকিস্তান ক্ষুব্ধ। পাকিস্তানের ধারণা, তারা বিনা বাধায় সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু তাদের প্রতিবেশী দেশগুলো এটিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।
জয়সওয়াল আরও বলেন, আফগানিস্তানের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এর জবাবে আফগান সেনারা সীমান্তে পাক সেনাদের ওপর ব্যাপক হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। যা টানা কয়েকদিন চলার পর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় থামে। কিন্তু এরমধ্যেই প্রায় ৭০ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হন।
সীমান্ত সংঘর্ষের জেরে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়ে পড়েছে। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানকে বলে আসছিল, তাদের মাটি থেকে টিটিপিসহ অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে পাকিস্তানে হামলা চালাতে না দেওয়া হয়। কিন্তু আফগানিস্তান সে অনুরোধ রাখেনি।
এদিকে, নতুন শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কাবুল শক্ত ভাষায় বলেছে, নিজ নাগরিকদের রক্ষায় তারা সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সীমান্তে কয়েক দিনের সংঘাত শেষে ১৯ অক্টোবর কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর সোমবার (২৭ অক্টোবর) দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আবারও বৈঠকে বসেছিলেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তবে বুধবার পাকিস্তান জানায়, এই আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এ থেকে কোনো কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, আফগান প্রতিনিধিরা ইসলামাবাদের মূল দাবির বিষয়ে অবস্থান বদল করেছেন। তাঁদের মূল দাবি ছিল, কাবুলকে পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
টিজে/টিএ