নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী ও ব্যক্তি নির্ভর : হাসনাত আবদুল্লাহ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যক্তি-নির্ভর স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত আমরা দেখেছি। শুরু থেকেই বলেছি, নির্বাচন কমিশনের কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। কোন নীতির ভিত্তিতে এখন শাপলা কলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, তা কি তারা ব্যাখ্যা করেছে? আবার কোন নীতিমালার কারণে শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটাও বলেনি। অন্য দলগুলোর প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রেও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বরগুনা জেলা শাখার সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনে একাধিক পক্ষের প্রভাব রয়েছে। ৫ আগস্টের পর গঠিত নির্বাচন কমিশনে বিএনপি, জামায়াত ও সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ কমিশনকে ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে। বিএনপি-সমর্থিত কমিশনাররা বিএনপির, জামায়াত-সমর্থিতরা জামায়াতের, আর সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠরা তাদের পক্ষেই কাজ করছেন। অথচ আওয়ামী লীগের অসংখ্য সরকারি চাকরিজীবীর বিষয়ে কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

তিনি বলেন, আমরা এনসিপি আমাদের অবস্থানে অটল। কমিশন নিজের মতো করে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সংস্কার ও আমাদের প্রতীক শাপলা নিয়ে আমরা সবসময় একই অবস্থানে আছি। যদি শাপলা প্রতীক না দেওয়া হয়, তবে আইনগতভাবে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। কিন্তু কমিশন বলেছে, কেন শাপলা দেওয়া হবে না- এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। ব্যাখ্যা বিহীন রাষ্ট্র ৫ আগস্টের আগে শেখ হাসিনা পরিচালনা করতেন। এখন যদি কমিশন মনে করে তারাও জবাবদিহিহীন সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা মানা সম্ভব নয়।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলামিক ও অইসলামিক দল হিসেবে বিভাজনের পক্ষে আমি না। এখন দলগুলোর মধ্যে মূল বিভাজন সংস্কারপন্থী ও সংস্কারবিরোধী অবস্থানে। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে এখন দুটি শিবির- একটি সংস্কারের পক্ষে, অন্যটি বিপক্ষে।

বিএনপির জুলাই সনদে স্বাক্ষর বদলের দাবির বিষয়ে হাসনাত বলেন, আমরা বলেছিলাম, স্বাক্ষরের আগে আমাদের সেই সনদ দেখাতে হবে। তারা না দেখে স্বাক্ষর করেছে- এটা কি উচিত ছিল? আমরা না দেখে স্বাক্ষর করিনি, তাই আমাদের দোষারোপ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তারাই আমাদের অবস্থানে এসেছে। আমরা বলেছিলাম, জুলাই সনদ ও তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে, তারপরই স্বাক্ষর করা সম্ভব।

বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের গুঞ্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে জোট হয়েছে বা হবে- এমন কিছু আমি জানি না। তবে যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবে, তারা চাইলে আমাদের সঙ্গে আসতে পারে। আমরা সংস্কারপন্থীদের নিয়েই ভাবছি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন, কমিশনের বর্তমান প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ বিভাজন দেখে মনে হয়, তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। এটি জনগণের পর্যবেক্ষণের বিষয়।

সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত।

এমকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আজ ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী শত্রুমুক্ত দিবস Dec 18, 2025
img
সম্পর্ক ভাঙা মানেই ব্যর্থতা নয়, সমাজকে নতুন করে ভাবতে বললেন মিমি Dec 18, 2025
img
যুক্তরাজ্য সফরে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান Dec 18, 2025
img
এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী Dec 18, 2025
img

ড. রেদোয়ান

১০০ বছরেও ক্ষমতার ধারে-কাছে যেতে পারবে না জামায়াত Dec 18, 2025
img
বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ ৪৩ টাকা  Dec 18, 2025
img
২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলো ভারতের ফুটবল ক্লাব মোহনবাগান Dec 18, 2025
img

আইপিএল ২০২৬

কলকাতায় মুস্তাফিজের সতীর্থদের কার কত পারিশ্রমিক? Dec 18, 2025
img
ভারতে পালানোর সময় কেরানীগঞ্জ মডেল থানা মৎস্যজীবী লীগের সাধারন সম্পাদক গ্রেপ্তার Dec 18, 2025
img
পাঞ্জাবে ম্যাচ চলাকালে খেলোয়াড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা Dec 18, 2025
img
আবারও চোট শুভমানের, বিশ্বকাপের আগে নতুন উদ্বেগ ভারতের Dec 18, 2025
img
চট্টগ্রামের আলোচিত 'সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর জামিন স্থগিত Dec 18, 2025
img
বিশ্ববাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম Dec 18, 2025
img
এমবাপের জোড়া গোলে তালাভেরাকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় রিয়াল মাদ্রিদ Dec 18, 2025
img
মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং, রোমাঞ্চকর ম্যাচে তবুও হার দুবাই ক্যাপিটালসের Dec 18, 2025
img
টাইব্রেকারে ফ্লামেঙ্গোকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন পিএসজি Dec 18, 2025
img
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করলে দেশের জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না : ইশরাক Dec 18, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাহিদ গ্রেপ্তার Dec 18, 2025
img
নিজের প্রতি বিশ্বাসই হলো সবচেয়ে বড় ঢাল: রাণী মুখার্জি Dec 18, 2025
img
তারেক রহমানের ফ্লাইটে দেশে ফিরতে নেতাকর্মীদের হিড়িক, শেষ সব টিকিট Dec 18, 2025