বৈধভাবে হ্যাকিং করে বছরে কোটি টাকা আয়!

অ্যাথিক্যাল হ্যাকিং বা নৈতিক হ্যাকিং নতুন কোনো ধারণা নয়। তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিশ্বজুড়ে বহু তরুণের স্বপ্নের পেশা হয়ে উঠেছে। অ্যাথিক্যাল বা নৈতিক হ্যাকিং হলো কোনো ওয়েবসাইট, সফটওয়ার প্রভৃতি হ্যাক করার বৈধ পন্থা। নিজেদের সিস্টেমের দুর্বলতা বা বাগ খুঁজে বের করতে বড় বড় কোম্পানিগুলো পুরস্কার ঘোষণা করে।

উত্তর ভারতের শিবাম ভানিস্ত (২৩) সান ফ্রান্সিসকো ভিত্তিক হ্যাকার ওয়ার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। এই প্লাটফর্মটি নৈতিক হ্যাকিং চর্চাকারী একটি হ্যাকার প্ল্যাটফর্ম। স্টারবাকস, ইনস্টাগ্রাম, গোল্ডম্যান শ্যাচ, টুইটার, জোমাটো ও ওয়ানপ্লাসের মতো নাম করা সব ক্লায়েন্টদের এরা সেবা দিয়ে থাকে।

ভানিস্ত একজন নৈতিক হ্যাকার, যিনি বিভিন্ন ওয়েব সাইটের দুর্বলতা খুঁজে বের করার কাজ করেন। বছরে তার গড় আয় ১ লাখ২৫ হাজার ডলার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি!

এ বিষয়ে ভানিস্ত বলেন, “গড়ে সপ্তাহে আমি প্রায় ১৫ ঘণ্টা হ্যাকিংয়ে ব্যয় করি। তবে আমার সময়সূচীর উপর এটি নির্ভর করে, সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। কখনো টানা কয়েকদিন ধরে হ্যাকিং চলে আবার কখনো কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকে।”

তিনি ১৯ বছর বয়স থেকে কম্পিউটার ও নৈতিক হ্যাকিং জগত সম্পর্কে শিখতে শুরু করেছিলেন। তবে শুরুতে পরিবার তার কাজকর্ম নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল।

“তারা সময়ের সঙ্গে বুঝতে পেরেছেন যে, আমি কী করছি এবং তারা জেনে গেছেন যে নৈতিক হ্যাকিং একটি সম্পূর্ণ বৈধ এবং বাস্তবধর্মী পেশা,” তিনি বলেন।

ভানিস্ত ২০ বছর বয়সে ইন্সটাকার্ট এবং পরে মাস্টারকার্ড থেকে ত্রুটি খুঁজে বের করার মধ্য দিয়ে প্রথম উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

ভানিস্ত আরও বলেন- “এটি একটি অবিশ্বাস্য অনুভূতি, আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমি এটি করতে পেরেছি! এই উত্তেজনা আমাকে কয়েক দিনের জন্য নিদ্রাহীন করে রেখেছিল।”

“হ্যাকার ওয়ানের ‘হ্যাকার-চালিত সুরক্ষা প্রতিবেদন ২০১৯’ থেকে জানা যায় যে, ২০১৮ সালে বিভিন্ন কোম্পানি প্রদত্ত পুরস্কারের মধ্যে ২৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৪ ডলার ভারতের নৈতিক হ্যাকার সম্প্রদায় হাতে গিয়েছিল,” ভানিস্ত জানান।

ভানিস্তের মতো অনেক তরুণের জন্য নৈতিক হ্যাকিং হতে পারে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করবার জায়গা। প্রতিবছর বহু কোম্পানি তাদের সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করতে বড় ধরণের পুরস্কার ঘোষণা করে থাকে।

খাদ্য সরবরাহ ও বিতরণ প্ল্যাটফর্ম জোমাটো তার প্ল্যাটফর্মের বাগ খুঁজে ফিক্স করার জন্য এখন পর্যন্ত ৪৩৫ জন হ্যাকারকে ১ লাখ ডলারের বেশি প্রদান করেছে।

ওয়ানপ্লাস এই সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে, তারা একটি সুরক্ষা প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র স্থাপন করেছে, যা সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একটি বাগ অনুদান প্রদান করবে। যারা এই সংস্থাটির সিস্টেমের সম্ভাব্য হুমকি আবিষ্কার করবে এবং প্রতিবেদন জমা দেবে তাদেরকে বাগ প্রতিবেদনের বিভিন্নতার ভিত্তিতে ৫০ থেকে ৭ হাজার ডলার পর্যন্ত পুরস্কার দেয়া হবে।

সুরক্ষা গবেষকদের জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল একটি বাগ অনুদানের প্রোগ্রাম খুলেছে। যেখানে তাদের বাগগুলি অনুসন্ধানের জন্য অ্যাপল কর্তৃপক্ষ ১ লাখ থেকে ১ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তথ্যসূত্র: গাল্ফ নিউজ

 

টাইমস/এনজে/জিএস 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দুমকিতে বৈশাখী ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড, আহত ২ Apr 14, 2025
img
ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনের রোডম্যাপের সমস্যা সমাধান হবে : মির্জা ফখরুল Apr 14, 2025
img
আন্দোলনে গুলির নির্দেশ: সহকারী কমিশনার সাইফুল গ্রেফতার Apr 14, 2025
img
যে বিমানের ইঞ্জিন মোটরসাইকেলের চেয়েও ছোট! Apr 14, 2025
img
নববর্ষেও দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ : দুলু Apr 14, 2025
img
যুদ্ধ বন্ধের নিশ্চয়তা পেলে জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস Apr 14, 2025
img
মস্কো সফরে যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 14, 2025
img
আমরা এই উৎসব ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই : শিল্প উপদেষ্টা Apr 14, 2025
img
নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল Apr 14, 2025
দুদকের অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’, পরোয়ানা জারির খবরে টিউলিপের আইনজীবী Apr 14, 2025