আইসক্রিম কিনতে গিয়ে নিখোঁজ, ১৭ বছর পর ফিরলো পরিবারের কাছে!

দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরেছে কিরণ। মাত্র ১০ বছর বয়সে ইসলামাবাদের নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়েছিল সে। বর্তমানে ২৭ বছর বয়সী কিরণকে খুঁজে পেতে এবং পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করেছে 'পাঞ্জাব সেফ সিটি' কর্তৃপক্ষের তথ্য ভান্ডার।

ঈদি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, সেফ সিটি সিস্টেমে সংরক্ষিত রেকর্ডের সঙ্গে কিরণের দেওয়া তথ্যের মিল পাওয়ার পরই তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়। এরপর তাকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

হারিয়ে যাওয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কিরণ জানান, ছোটবেলায় একদিন আইসক্রিম কেনার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বের হন এবং পথ হারিয়ে ফেলেন। পরে এক অপরিচিত ব্যক্তি তাকে ইসলামাবাদের একটি ঈদি সেন্টারে পৌঁছে দেন। পরবর্তী সময়ে প্রয়াত সমাজকর্মী বিলকিস ঈদি তাকে করাচিতে নিয়ে আসেন এবং তিনি ঈদি ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানেই বেড়ে ওঠেন।

দীর্ঘ এই সময়ে ঈদি সেন্টারে তিনি ধর্মীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেছেন। সেখানে কাটানো সময়কে 'খুবই আনন্দদায়ক' উল্লেখ করলেও বাবা-মায়ের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হওয়াকে 'জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন' হিসেবে বর্ণনা করেছেন কিরণ।

ঈদি সেন্টারের ইনচার্জ শাবানা ফয়সাল জানান, এর আগেও কিরণের পরিবারকে খুঁজে বের করার জন্য তাকে কয়েকবার ইসলামাবাদে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তখন কোনো সফলতা আসেনি।

তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে নিখোঁজ হওয়া ১২টি শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে করাচির ৫টি মেয়েও রয়েছে।

মেয়ের সন্ধান পাওয়ার খবর পেয়ে কিরণের বাবা করাচিতে ছুটে আসেন। প্রায় দুই দশক ধরে মেয়েকে আশ্রয়, শিক্ষা ও যত্ন দেওয়ার জন্য তিনি ঈদি ফাউন্ডেশনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ঈদি ফাউন্ডেশন পাকিস্তানের বৃহত্তম মানবিক সংস্থা হিসেবে পরিচিত। প্রয়াত আব্দুল সত্তার ঈদি প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে বিলকিস ঈদি পরিচালিত এই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ, পরিত্যক্ত ও অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে আসছে। কিরণের এই ঘটনা আবারও সংস্থাটির মানবিক কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরল।

সূত্র: গালফ নিউজ

এমআর/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজের অপেক্ষা আগের শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে Nov 26, 2025
img
বায়ুদূষণের কবলে দিল্লি, ঢাকার পরিস্থিতি 'অস্বাস্থ্যকর' Nov 26, 2025
img
‘তাঁদের মেধা আছে, লজ্জা নেই’ Nov 26, 2025
img

নীলফামারীতে সেনাপ্রধান

দেশ গঠনে ইএমই কোরের ভূমিকা প্রশংসনীয় Nov 26, 2025
img
বাংলাদেশ নিয়ে সতর্ক মালয়েশিয়া, মনে করালেন দুঃস্মৃতি Nov 26, 2025
img
তরুণদের নিয়ে বাংলাদেশ ‘শক্তিশালী’: মালয়েশিয়া কোচ Nov 26, 2025
img
আর্সেনাল, লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লিগসহ টিভিতে আজকের খেলা Nov 26, 2025
img
আজারবাইজান ও মালয়েশিয়ার সাথে জেতার চেষ্টা করব: আফঈদা Nov 26, 2025
img
বন্দর লিজ দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় : মাসুদ কামাল Nov 26, 2025
img
আইসক্রিম কিনতে গিয়ে নিখোঁজ, ১৭ বছর পর ফিরলো পরিবারের কাছে! Nov 26, 2025
img

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ

জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দাপুটে জয় শ্রীলঙ্কার Nov 26, 2025
img

জকসুর জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা

আমাকে নিয়ে নোংরামি বন্ধ করুন Nov 26, 2025
img
২০০৪ সালের সাক্ষাৎ স্মরণ করে ধর্মেন্দ্রের প্রয়াণে আবেগঘন বার্তা পাক অভিনেত্রী রিমার Nov 26, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Nov 26, 2025
ভোলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে ভোলা বরিশাল সেতুর দাবিতে আন্দোলন Nov 26, 2025
রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১৭ Nov 26, 2025
প্লট বরাদ্দে অনিয়মের মামলার ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ, Nov 26, 2025
ব্রাজিলকে হারিয়ে ফাইনালে পর্তুগাল Nov 26, 2025
‘জুবিন গার্গের মৃত্যু পরিকল্পিত’, বিস্ফোরক দাবি আসামের মুখ্যমন্ত্রীর Nov 26, 2025
img
৫ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা পাওয়া যাবে : ইসি সচিব Nov 26, 2025