চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে ডায়রিয়া, ১০ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ১০৭০ রোগী

চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত ১০ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই শিশুসহ এক হাজার ৭০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালের আউটডোরে গড়ে আরও ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে অভিভাবকদের সচেতন হওয়াই সবচেয়ে জরুরি। শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা করাকেই রোগ বিস্তারের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকেরা।

রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডগুলোর ধারণক্ষমতার থেকে কয়েকগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় অনেক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীকে ঠান্ডা মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু ডায়রিয়া ওয়ার্ডেই ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭০ জন রোগী। গত ১৪ ডিসেম্বরই ১০৯ জন ভর্তি হয়েছে।

দায়িত্বরত একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, শীতের শুরুতেই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ বেড়ে যায়। আমাদের জনবল সঙ্কট। তবুও আমরা দিনরাত অক্লান্তভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, বর্তমানে সদর হাসপাতালে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনেক শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে অভিভাবকদের সচেতন হওয়াই সবচেয়ে জরুরি। ডায়রিয়া নিজেই খুব মারাত্মক নয়, কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা না হলে পানিশূন্যতা শিশুর জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় রোটা ভাইরাসে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর নয় এবং এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখনো নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। তাই চিকিৎসার মূল ভরসা ওরাল স্যালাইন। শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের নরম খাবার, কাচা কলা ভর্তা, ডালের পানি খাওয়াতে হবে এবং প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর স্যালাইন খাওয়ানো বাধ্যতামূলক।

ডা. খোকন জানান, এখনই সচেতন না হলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সামান্য অবহেলাও মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিদেশে হাদির চিকিৎসার সকল খরচ দেবে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা Dec 15, 2025
img
সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে এভারকেয়ার ছাড়লেন ওসমান হাদি Dec 15, 2025
img
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে ডাকসুর মার্চ শুরু Dec 15, 2025
img
শেষ মুহূর্তে বাতিল হলো নরেন্দ্র মোদি ও মেসির সাক্ষাৎ Dec 15, 2025
img
বিজয় দিবস উপলক্ষে ৪০ মিনিট বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল চলাচল Dec 15, 2025
img
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ Dec 15, 2025
img
ওমরাহ ও হজযাত্রীর শিশুদের নিরাপত্তায় সৌদি আরবের নতুন উদ্যোগ Dec 15, 2025
img
সুদানে বাংলাদেশের ৬ শান্তিরক্ষীর মৃত্যুতে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার শোক Dec 15, 2025
img
৩৬ বাংলাদেশিকে নাগরিকত্ব দিল ভারত Dec 15, 2025
img
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছক্কার নতুন দুই রেকর্ড গড়লেন অভিষেক শর্মা Dec 15, 2025
img
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের Dec 15, 2025
img
এখনো আমরা স্বাধীন নই, দাবি ‘গাল্লিবয়’ খ্যাত তাবীবের Dec 15, 2025
img
বলিভিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় প্রাণ গেল ৭ জনের Dec 15, 2025
img
'শোয়াই ফেলব একদম’ শান্তর এমন মন্তব্যের জবাব মাঠে দিতে চান মিরাজ Dec 15, 2025
টানা চতুর্থ জয়ে আর্সেনালের আরও কাছে ম্যানসিটি Dec 15, 2025
দক্ষিন আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে ভারত Dec 15, 2025
img
হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে চলছে পঞ্চম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ Dec 15, 2025
img
বাংলাদেশ ঢুকছে আরেকটি অত্যন্ত সংবেদনশীল অধ্যায়ে : জিল্লুর রহমান Dec 15, 2025
img
ব্রিটিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেরা ক্যাডেট পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশের রিফাত Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় আটক আরও ২ Dec 15, 2025