ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হত্যাচেষ্টার জন্য ভারতকে দায়ী করে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। এ লক্ষ্যে অবিলম্বে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ ঘোষণা এবং সকল কূটনীতিককে বহিষ্কারের দাবিও জানিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মহান বিজয় দিবস ও দলের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শরীফ ওসমান হাদীর দ্রুত সুস্থতা কামনায় আয়োজিত এক মিলাদ মাহফিল থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
এ সময় শাহী বাংলার সুলতান, দরবেশ, পীর, ফরায়েজী ও বাঁশের কেল্লা আন্দোলনের শহীদ, পাকিস্তান আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
দোয়া মাহফিল-পূর্ব বক্তৃতায় জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, সরাসরি ভারতের ইন্ধনে শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। ভারতের নাগরিকরা প্রকাশ্যে উল্লাস করে বলছে, তাকে গুলি করা সন্ত্রাসীরা দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা র-এর এজেন্ট। সন্ত্রাসীদের যে পরিচয় পাওয়া গেছে, তার সঙ্গেও এই দাবি মিলে যায়। তারা হলো ভারতের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রশিক্ষিত ক্যাডার। ফলে হাদী হত্যাচেষ্টায় ভারতের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অপরাধী খুনি ও সাজাপ্রাপ্তদের আশ্রয়স্থল হলো ভারত। এটি কখনোই বন্ধু রাষ্ট্র হতে পারে না, বরং তাদের আচরণ বৈরী রাষ্ট্রের মতো। গত ৫৪ বছর ধরে সীমান্তে ভারতের খুনি বাহিনী বিএসএফ আন্তর্জাতিক সীমানায় গুলিবর্ষণ করে বাংলাদেশিদের হত্যা করে আসছে। এই অবস্থায় নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ফজলুল কাদের চৌধুরী, খান এ সবুর ও মাহমুদুন্নবী চৌধুরীসহ কোনো রেজাকারেরই দাঁড়ি-টুপি ছিল না। অথচ আজ দাঁড়ি-টুপি পরিয়ে অপমান ও অপদস্ত করার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করে ভারতীয় বয়ান প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। তারা ইন্দিরা গান্ধীর ভারতীয় অ্যাসেম্বলিতে দেওয়া হাজার বছরের বদলা নিয়েছি বক্তব্যের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বরকে প্রায় হাজার বছরের শাসনের বদলা নেওয়ার দিন হিসেবে প্রচার করছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, জুলাই গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এ লক্ষ্যে তারা জুলাই বিপ্লবীদের হত্যার পরিকল্পনা করেছে। তারই অংশ হিসেবে জুলাই বিপ্লবের অন্যতম কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যা করতে দিবালোকে গুলি করা হয়েছে। আল্লাহ হাদীকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, তিনি যেন পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে ফিরে আসতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাই- খুনি হাসিনাসহ সকল খুনিকে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। দেশের সকল মানুষের প্রতি আহ্বান, আপনারা ভারতের পণ্য বয়কট করুন এবং ভারতের দালালদের প্রতিরোধ করুন।
এমআর/টিকে