ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের রিমোট কন্ট্রোল আবিস্কার

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে তৈরি হওয়া ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণে দেহ গৃহীত শর্করার স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনায় অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ রোগীকে ওষুধ কিংবা ইনজেকশনের সাহায্যে দেহের ইনসুলিন প্রতিরোধ হ্রাস ও শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব লোয়া’র গবেষকরা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন যেটি কোন রকম ওষুধ কিংবা ইনজেকশনের সহায়তা ছাড়াই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে। গবেষকরা বলছেন, এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের রিমোট কন্ট্রোল।

এ বিষয়ে প্রধান গবেষক এবং ইউআই কার্ভার কলেজ অব মেডিসিনের প্রফেসর ভ্যাল শেফিল্ড বলেন, “আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রিমোট কন্ট্রোল তৈরি করেছি। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে কিছুটা সময় বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের মধ্যে কাটালে রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ইনসুলিন প্রতিরোধী উপাদান হ্রাস পায়।”

শেফিল্ড আরো বলেন, “বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। এর ফলে ঘুমের সময় স্থির বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় থেরাপি গ্রহণ করে সারাদিন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে এমন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।”

গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, স্থির বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্র লিভারের অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে দেহে ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বাড়িয়ে তোলে।

প্রাথমিক গবেষণায় ডায়াবেটিস টাইপ-২ আক্রান্ত ইঁদুরকে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা স্থির বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের মধ্যে রাখা হলে তাতে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।

সহযোগী গবেষণ সানি হুয়াং বলেন, “এটি অবাক হওয়ার মতো বিষয়। কারণ এইসব প্রাণীরা টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত এবং তাদের রক্তে উচ্চমাত্রার শর্করার উপস্থিতি  ছিল, কিন্তু বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাবে তা স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসে।”

মানব যকৃত কোষের উপর পরীক্ষা চালিয়েও বেশ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ। বর্তমানে তারা আরো বৃহৎ পরিসরে প্রাণীদেহে পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।

গবেষকগণ আশাবাদী তাদের এই আবিষ্কার অদূর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন বয়ে আনবে।

তথ্যসূত্র: সাইন্স ডেইলি।

 

টাইমস/এনজে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কলকাতায় নিজের জন্মদিন কীভাবে কাটালেন জয়া আহসান Jul 02, 2025
img
জুলাইয়ে এজবাস্টনে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান Jul 02, 2025
img
জামায়াতের সঙ্গে জোট ও পিআরে নুরের একমত প্রকাশ Jul 02, 2025
img
এই দিন ভুলব না কখনো : নিলা ইসরাফিল Jul 02, 2025
img
‘প্রেমে ব্যর্থ হলে বাথরুম পরিষ্কার করি’ Jul 02, 2025
img
মধ্যরাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার বরখাস্ত Jul 02, 2025
img
রেমিট্যান্স ও রিজার্ভের রেকর্ড নিয়ে নতুন অর্থবছরের যাত্রা Jul 02, 2025
img
পদযাত্রার মাধ্যমে এনসিপি ইশতেহার ও ঘোষণাপত্র তৈরি করবে : নাহিদ ইসলাম Jul 02, 2025
img
‘জীবনে প্রত্যেকটা হারের হিসেব রাখে না স্কোরবোর্ড’, গোপন গল্পে নতুন ভূমিকায় ধাওয়ান Jul 02, 2025
img
সাংবাদিক বাংলায় প্রশ্ন করতেই আটকালেন প্রসেনজিৎ! অনুবাদ করে সামলালেন রাজকুমার রাও Jul 02, 2025
img
আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময়সহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল Jul 02, 2025
img
এনসিপি জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে সংসদে কথা বলবে : সারজিস Jul 02, 2025
img
রংপুর-৪ আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে আখতারের নাম ঘোষণা Jul 01, 2025
img
যারা প্রোফাইল লাল করেছিল তাদের জীবন লাল করে দেবে আ. লীগ : পার্থ Jul 01, 2025
img
ইসরায়েল ও নেতানিয়াহুর পতন সন্নিকটে : ইরানি জেনারেল Jul 01, 2025
img
পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিনেত্রী মিনু মুনির Jul 01, 2025
img
প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে শেষ বার কী কথা হয়েছিল শেফালির! Jul 01, 2025
img
৩ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে ভারতের পৌরাণিক সিনেমা রামায়ণের লোগো Jul 01, 2025
img
মুদ্দাছির আজিজের কমেডি ছবিতে জুটি বাধছেন সারা-আয়ুষ্মান Jul 01, 2025
img
তামাককে মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করার দাবি Jul 01, 2025