সাম্যের, সমতার ও সার্বজনীন একটি উৎবের নাম ঈদ। এটি এমন একটি উৎসব, যেখানে ধনী-গরিব একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশ নেন। এক কাতারে দাঁড়িয়ে সবাই নামাজ পড়েন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর এক কবিতায় বলেছেন, ‘গাহি সাম্যের গান- যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান’। কিন্তু বর্তমান সময়ে ঈদসহ বিভিন্ন উৎবে যেনো বাধা-ব্যবধান বেড়েই চলেছে। কারও নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কেউ ঈদ বাজারসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজার হাজার টাকা উড়ায়। ঈদ আসলেই ধনী-গরীবের বৈষম্য নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ে আমাদের সমাজে।
রাজধানীর অভিজাত শপিং মল বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন শপিংমলেই এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। হাজারো মানুষের ভীড়ে বিক্রেতারাও হিমশিম খাচ্ছেন। বসুন্ধারা শপিং মলের একটি শো-রুমের বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্রেতার ভীড়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। গত দু’বছর করোনার কারণে বেচা-বিক্রিতে তারা যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন, সেটা এবার পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঈদ উৎসবে অংশ নিতে পুরো শপিং মল জুড়েই নতুন জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য কেনাকাটা করছেন হাজার হাজার মানুষ। বসুন্ধারায় কেনাকাটা করতে এসেছেন হাতেম আলী। তিনি বলেন, করোনার কারণে গত দু’বছর ঠিক মতো ঈদ বাজার করতে পারেননি। এবার স্বাচ্ছন্দে ঈদ বাজার করছেন।
অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের মুখের অন্ন জোগাতেই যারা হিমশিম খাচ্ছেন তাদের একজন সাভারের নিকরাইল গ্রামের আবদুর রহিম। রিক্সা চালিয়ে সংসার চালান। চার সন্তানের জনক তিনি। দু’সন্তান বাক প্রতিবন্ধি। দু’জন স্কুলে গেলেও অভাবের কারণে তাদের স্কুলে যাওয়াও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সারা বছর এভাবে চললেও রমজান ও কোরবানির ঈদ উৎসবগুলো আসলে পড়ে যান বিপাকে। পুরো পরিবারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া।
অন্যের বাড়িতে কাজ করেন রেশমা বেগম। স্বামী অসুস্থ। নিজের সামান্য আয়ে কোনও মতে পরিবারের সদস্যদের মুখে সারা বছর কিছুটা খাবার তুলে দিতে পারলেও ঈদ উৎসবগুলোতে দুঃখ বেদনা বেড়ে যায়। সন্তানদের নতুন জামা-কাপড়ের চাওয়া পাওয়া পুরণ করতে পারেন না।
ধনী গরিবের বৈষম্য নিয়ে আমাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখুন