পাহারায় আছি, আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ হবে : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা কাউকে আক্রমণ করবো না, এই পর্যন্ত করি নাই। এবার আমরা সর্তক পাহারায় আছি, আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন ছাড়ব? কাদের ছাড়ব? এরা (বিএনপি) ক্ষমতা গেলে বাংলাদেশ গিলে খাবে। এরা ক্ষমতা গেলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ গিলে খাবে। এরা ক্ষমতা গেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা গিলে খাবে। তাদের অপশক্তিকে একসঙ্গে রুখতে হবে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক মতবিনিয়ম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা, ঢাকা জেলা শাখা, নির্বাচিত দলীয় জনপ্রতিনিধি এবং সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মতবিনিময় সভা করেন তিনি।

আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একাত্তরের বিজয়কে যদি সংহত করতে চান তাহলে বিজয়ের প্রধানতম শত্রু, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের আসল ঠিকানা বিএনপিকে পরাজিত করতে হবে। এরা হলো সব অপশক্তির বিশ্বস্ত ঠিকানা। এই দলকে পরাজিত করতে হবে। না হলে বিজয় সংহত হবে না। যারা আমাদের বিজয়কে বারবার রক্তাক্ত করেছে, তাদের পরাজিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতীয় নেতাদের রক্ত আমাদের বিজয়কে রক্তাক্ত করেছে। এরপর ২১ বছর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়েছে। এরপরে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তে ভিজে গেছে বাংলার মাটি। আজকে আমাদের চিহ্নিত করতে হবে, কারা বিজয়ের শত্রু।

তিনি বলেন, বিজয় যদি নিশ্চিত করতে চান। তাহলে সবার আগে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের ঠিকানা বিএনপিকে পরাজিত করতে হবে। যারা আমাদের বিজয়কে বার বার ভূলণ্ঠিত করেছে, তাদের আমাদের পরাজিত করতে হবে। বাংলার মাটি থেকে এদের অস্তিত্ব মুছে দিতে হবে। তা না হলে চূড়ান্ত বিজয় সংহত হবে না।

বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনুমতি না দিলে তারা নাকি অলিগলি দখল করবে। তাহলে নাকি সব দরজা খুলে যাবে স্বাগত জানাতে। এবার আটঘাট বেঁধে নেমিছি। দেখবো কোন অলি-গলিতে অবস্থান নেবেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন তারা নাকি নেতাকর্মীদের আসতে বলেননি। ফখরুলের নরম কথায় বিশ্বাস করবেন না। তারা বিশ্বাসঘাতক। যাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে, জাতীয় নেতাদের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করে, তাদের আর বিশ্বাস করা যায় না।

আগামী ২৭ তারিখ থেকে নেতাকর্মীদের নির্ঘুম রাত কাটানোর নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৭ তারিখ থেকে চোখে ঘুম থাকবে না। প্রয়োজনে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। যেখানে আমার অস্তিত্বের প্রশ্ন সেখানে ঘুম দিয়ে কি করবো। বারে বারে না এবারই এদের চিরতরে পরাজিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের লক্ষ্য শুধু নির্বাচন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি নির্বাচন আমাদের লক্ষ্য না, আমাদের লক্ষ্য দেশ থেকে অপশক্তি, নৈরাজ্য ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত করা। বাইরে কে কি বলছে তা আমাদের জানার দরকার নেই। কারণ, মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শপথ নিয়েছে বাংলাদেশ থেকে অপশক্তি দূর করবে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তা ছাড়বেন না। আমরা আক্রমণ করবো না, এ পর্যন্ত করিনি। এপর্যন্ত আমরা বিরোধী দলের ওপর কোনো আক্রমণ বা উসকানিমূলক কথা বলিনি।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খাঁন নিখিল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী আসিফ ইনান।

এছাড়া দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চলনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।

Share this news on:

সর্বশেষ

হলফনামায় শেখ হাসিনার মি'থ্যা তথ্য, ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই ইসির Jul 19, 2025
img
মুজিববাদের কবর দিতে গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার নেই : এ্যানি Jul 19, 2025
বাংলাদেশে স্টারলিংক কার্যক্রমে সরকারকে ‘নজিরবিহীন’ বললো স্পেসএক্স Jul 19, 2025
‘হিরোস উইদাউট কেপস’ ডকুমেন্টারি: জুলাই আন্দোলনের প্রামাণ্য চিত্র Jul 19, 2025
img
জামালপুরে যুব মহিলা লীগ নেত্রী গ্রেফতার Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশে স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে চালু, রিসেলার বিএসসিএল Jul 19, 2025
img
দলীয় উন্নয়নেই মনোযোগ, আজও দ্বিতীয় সারির দল পাঠাবেন বাটলার Jul 19, 2025
img
পাকিস্তানের ইরানি দূত এখন এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড Jul 19, 2025
img
এসি মিলানে মডরিচ, ফিরে গেলেন ছোটবেলার প্রেমে Jul 19, 2025
img
সমাবেশের আগেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো জামায়াতকর্মীরা Jul 19, 2025
img
ক্ষমা নয়, কিসাসই চূড়ান্ত, ইয়েমেনি পরিবার অনড় নিমিশার মৃত্যুদণ্ডে Jul 19, 2025
img
দুবাইফেরত ৩ যাত্রীর কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকার পণ্য জব্দ Jul 19, 2025
img
ঘরের মাঠে গায়ানার চ্যালেঞ্জ, টানা দ্বিতীয় শিরোপার স্বপ্নে রংপুর Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশি নৌকা কিনবে আলজেরিয়া, আগ্রহী বিনিয়োগে Jul 19, 2025
img
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি হবে ‘উইদাউট আওয়ামী লীগ’:হাসনাত আবদুল্লাহ Jul 19, 2025
img
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে চাপাতি হাতে প্রকাশ্যে ছিনতাই Jul 19, 2025
img
পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষ: কোটালীপাড়ায় আ.লীগের ১৬৫৫ নেতাকর্মীর নামে মামলা, গ্রেফতার ১২ Jul 19, 2025
img
পান্তকে শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলানোর পক্ষে নন শাস্ত্রী Jul 19, 2025
img
জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ছিটকে গেলেন গ্লেন ফিলিপস Jul 19, 2025
img
ব্যাট হাতে সাকিবের ঝড়ো ইনিংসের পর অবদান বল হাতেও, প্রথম জয় পেল মিয়ামি Jul 18, 2025