পিলখানা ট্র্যাজেডিতে খালাস পাওয়া ১৭৮ জনের মুক্তিতে নেই বাধা

পিলখানা বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১৭৮ জন আসামির মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন। ২১ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালতে তাদের জামিনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মো. বোরহান উদ্দিন জানান, “এ মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি আদালত একটি রায় দিয়েছেন, যেখানে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে সাজাপ্রাপ্তদের বাদ দিয়ে বাকিদের জামিনের আদেশ দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ১৭৮ জনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে মারা গেছেন। ২২ জানুয়ারি তাদের জামিননামা দাখিল করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর নথিপত্র কারাগারে গেলে তাদের নামে যদি অন্য কোনো মামলা না থাকে, তাহলে তারা কারামুক্ত হবেন।”

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর-এর সদর দপ্তরে ভয়াবহ বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। বিদ্রোহের পর হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলার বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। সেখানে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করে। এতে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন সাজা এবং ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা বহাল থাকে। তবে হাইকোর্ট রায় ঘোষণার আগে ১৫ জনসহ মোট ৫৪ জন আসামি মারা যান।

বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২০১০ সালে ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হলেও হত্যা মামলার প্রাধান্য দেওয়ায় এ মামলা দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে ছিল। অবশেষে ১৯ জানুয়ারির রায়ে বিস্ফোরক মামলায় বিচারাধীনদের মধ্যে ১৭৮ জনের মুক্তি নিশ্চিত হয়।

এদিকে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় পুনঃতদন্তের দাবিও উঠেছে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা গত ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ নিয়ে যান এবং ২৪ ডিসেম্বর সরকারের গঠিত কমিশন এই তদন্তের জন্য ৯০ দিনের সময় পায়।

রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের লিভ টু আপিলসহ উচ্চ আদালতের কিছু শুনানি এখনো বাকি রয়েছে। তবে বিচারাধীন আসামিদের মুক্তির মাধ্যমে পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ পূর্ণতা পেল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

টিএ/

Share this news on: