ফেব্রুয়ারিতেও খুলে দিতে হবে সেন্টমার্টিন, এমন দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটনকে ঘিরে সরকার নানান বিধি-নিষেধে দেশের পর্যটন খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন-জীবিকা অচল ও হুমকির মুখে পড়েছে।
সেন্টমার্টিনে ১০ হাজারের বেশি মানুষ বাস করে। যারা সম্পূর্ণভাবে পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সরকার সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নানান বিধি-নিষেধ দেওয়ার ফলে সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীসহ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোট কর্তৃপক্ষ বলছে দ্বীপের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পথে।
এর আগে সরকার সিদ্ধান্ত দেয় যে নভেম্বর ২০২৪-এ পর্যটকরা যেতে পারবে কিন্তু রাত্রিযাপন করতে পারবে না, ডিসেম্বর ২০২৪ ও জানুয়ারি ২০২৫-এ দুই হাজার জন পর্যটক যেতে পারবে ও রাত্রী যাপন করতে পারবে এবং ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ কোনো পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে পর্যটন ব্যবসায়ী ও দ্বীপের বাসিন্দারা নিদারুণ অর্থকষ্টে, অর্ধাহারে ও অনাহারে দিনাতিপাত করছেন।
সেন্টমার্টিন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিল। সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। তবে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ এবং পরিবেশবিধ্বংসী কার্যকলাপের কারণে দ্বীপটির প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল মূলত দ্বীপটির পুনরুজ্জীবনের জন্য। এ সময় দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যকে পর্যটকদের উপস্থিতি থেকে বিরতি দিয়ে পুনরুদ্ধার করার সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
কিন্তু এই সতর্কতার কারণে মানুষের পাশাপাশি, মানুষের উপর নির্ভরশীল প্রাণীরাও বিপাকে পড়েছে। সরকারি কড়াকড়ি আরোপের পর সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। এতে খাবার সংকটে পড়েছে দ্বীপের অন্তত চার হাজার কুকুর। এরইমধ্যে বেশকিছু কুকুর মারা গেছে বলে জানিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
এর আগে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জানান, সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত ও প্রবাল দ্বীপে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্তে পুরো দ্বীপবাসী দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে। কারণ, এই দ্বীপে ট্যুরিজম ব্যবসা ছাড়া বিকল্প কোনও জীবিকার পথ নেই।
টিএ/