দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের সম্পদ বিক্রয়ের হিড়িক পড়েছে। তদন্তে বের হয়েছে - প্রোপার্টি কেনাবেচার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে এসব সম্পত্তি ছাড়ছেন বাংলাদেশীরা। বিএফআইইউ -এর তদন্তে এই তথ্য উঠে আসে।
জানা গেছে, দুবাইয়ে ৪৬১ বাংলাদেশী নাগরিকের নামে ৯২৯টি নিবন্ধিত সম্পত্তি রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিদেশে অপ্রদর্শিত সম্পদ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশিরা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
সম্প্রতি এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলকে বিষয়টি জানিয়েছে বিএফআইইউ। এ বিষয়ে এনবিআরকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি। বিএফআইইউ জানায়, ‘দেশে-বিদেশে থাকা বাংলাদেশীদের অপ্রদর্শিত সম্পদ অনুসন্ধানে একটি জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম কাজ করছে।
বিদেশে থাকা এসব সম্পদ অনেকেই আয়কর নথিতে অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছেন, যাতে তারা আইনগত সমস্যা এড়িয়ে চলতে পারেন। এনবিআরের কর্মকর্তা জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশীদের বিদেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করার পরেও আয়কর দিতে হবে এবং এসব সম্পদের লাভের ওপর কর দেওয়া বাধ্যতামূলক।
এছাড়া, আয়ের সঠিক ঘোষণা না করলে মানি লন্ডারিং এবং অর্থ পাচারের মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমের সন্দেহও উঠছে, যা তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সম্পদ যদি মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে, তবে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে, এনবিআরকে শুধু আয়কর আদায় নয়, বরং মানি লন্ডারিং সম্পর্কিত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত গোল্ডেন ভিসা চালু করার পর থেকেই সেখানে বাংলাদেশীদের প্রপার্টি কেনার প্রবণতা বেড়েছিল। বিশেষ করে, রাজনীতিবিদ, বড় ব্যবসায়ী, ব্যাংকার এবং আমলাদের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে এ সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুবাইয়ে বাংলাদেশীদের অপ্রদর্শিত সম্পদ রয়েছে এমন তথ্য পেয়ে গত জানুয়ারিতে আরব আমিরাত সফর করে সিআইসির দুটি দল।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়ে তদন্তের কথা জানালেও, বর্তমানে এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে, তবে এটি একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ সরকারকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে যাতে অপ্রদর্শিত সম্পদ এবং মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে সঠিক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।