গতবছর বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া সর্বোচ্চ খরচের তালিকায় বাকি দেশ গুলোর মধ্যে আছে ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য। জানা গেছে মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে, ভারতে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ এর কেবল ডিসেম্বরে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে লেনদেন করেছেন ৮৩৪ কোটি টাকা, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এ লেনদেন তার আগের বছরের ডিসেম্বরের লেনদেনের তুলনায় ১০ দশমিক ২২ শতাংশ কম। ২০২৩ সালের একই মাসে কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা লেনদেন করেছিলেন ৯২৯ কোটি টাকা।
ডিসেম্বরে বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশিরা লেনদেন করেছেন ৪৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা, যা ছিল গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইস্টার্ন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হেড অব কার্ডস প্রধান বলেন, 'সাধারণত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নানা অফার দিয়ে থাকে, সে কারণে প্রতিবছরের ডিসেম্বরেই কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ে।'
তিনি বলেন, 'কার্ডের মাধ্যমে ফরেন কারেন্সি লেনদেন বেড়েছে, এর অন্যতম কারণ হলো এই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। অনেকেই বিদেশে ঘুরতে যান। 'ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকটও ছিল গত কয়েক মাস যাবৎ। এখন ডলারের প্রবাহ স্বাভাবিক হওয়ায় লেনদেনের সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ডলার খরচ ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। ওই মাসে দেশে সব ধরনের কার্ড লেনদেন ব্যাপকভাবে কমে। ওই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আগস্ট মাসে বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৩৭৩ কোটি টাকা।
একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান গণমাধ্যমকে বলেন, 'জুলাই ও আগস্ট মাসে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অনেক কমে গিয়েছিল। চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহকরা খরচের রাশ টেনে ধরার পাশাপাশি দেশজুড়ে অস্থিরতার কারণে ব্যাংকও স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারেনি। ফলে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনে পতন হয়েছে।’
তবুও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গতবছরের ডিসেম্বরে কার্ডে বিদেশে লেনদেন কমার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলাদেশিদের ভারতীয় ভিসা কম পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। 'এর অন্যতম কারণ হলো ভারত থেকে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনো জটিলতা রয়েছে। এই জটিলতা না থাকলে লেনদেনের পরিমাণ আরও বেশি হতো।'