খেজুরের দাম এবার কমেছে– এমন প্রচারণায় দুদিনেই বেড়ে গেলো খেজুরের দাম। রোজার আগে এবার খেজুরের দাম বাড়েনি, বরং কিছুটা কমেছিল। কিন্তু গত দুই দিনে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। শুল্কছাড় সুবিধা আর পর্যাপ্ত সরবরাহের মধ্যেও দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা দায় চাপালেন সিন্ডিকেটের ওপর।
রোজার প্রথম দিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হওয়া জাহেদী খেজুরের দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। দাম কিছুটা কম হওয়ায় নিম্নবিত্তের ও খেটে খাওয়া মানুষের চাহিদায় থাকে এ খেজুর। এখন বাজারে প্রতি কেজি জাহেদী খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৬০ টাকায়।
আরেকটু ভালো মানের খেজুর যারা খেতে চান তাদেরদের পছন্দে থাকে বরই খেজুর। বাজারে এ খেজুরের চাহিদা বেশি থাকায় পাইকারি বাজারে আর পাওয়া যাচ্ছে না এ খেজুর। যে কারণে খুচরা বাজারে বরই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এ খেজুর বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায়।
বাজারে মধ্য ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির চাহিদার শীর্ষে রয়েছে আজোয়া ও মরিয়ম খেজুর। বাড়তি চাহিদার কারণে এ দুই শ্রেণির খেজুরের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আজোয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ১০৫০ টাকা কেজিতে। আর বাজারে মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১২৮০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১১০০ থেকে ১১৮০ টাকায়।
ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে থাকা মেডজুল খেজুরের দামও কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহেও বাজারে মেডজুল খেজুর ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি রোজার প্রথম দিনে বিক্রি হচ্ছে ১৫৫০-১৬০০ টাকায়।
এছাড়াও বাজারে দাবাস খেজুর ৫০০ টাকা, মাশরুক ৮০০ টাকা, সুগাই খেজুর ১০০০ টাকা এবং ডাল খেজুর নামে পরিচিত তিউনিশিয়ান খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এসব খেজুরের দাম ছিল যথাক্রমে ৪৬০, ৭০০, ৯৫০ এবং ৬০০ টাকা কেজি।
এক ক্রেতা বলেন, সরকার যেটুকু শুল্ক মওকুফ করেছে, সেটা এখন পেটে ঢুকছে ব্যবসায়ী আর সিন্ডিকেটের। তিনি আরও বলেন, রোজার মাসকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই দেখি অসাধু চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। অন্য মুসলিম দেশগুলোতে যেখানে রোজাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা শত শত পণ্যে বিশেষ ছাড় দেয় সেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে ক্রেতাদের পকেট কাটে। এই চিত্র মনে হয় না কোনো দিন পাল্টাবে।
এদিকে সিন্ডিকেটের ওপর দায় চাপালেন ব্যবসায়ীরা তাদের দাবি, পাইকারি বাজারের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে পর্যাপ্ত খেজুর থাকা সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। সরকার যদি পাইকারি বাজারে অভিযান চালিয়ে খেজুরকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে পারে, তাহলে প্রতি কেজিতে খেজুরের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত এমনিতেই কমে যাবে।