রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যের পরিমাণ কমানোর পরিকল্পনা জাতিসংঘের

জরুরি ভিত্তিতে তহবিল সংগ্রহ করা না হলে আগামী এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাবারের বরাদ্দ কমানোর পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে দেখা দিতে পারে তীব্র খাদ্য সংকট।

জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) লিখিতভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারের বরাদ্দ অর্ধেকের বেশি কমানোর পরিকল্পনার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছে। আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য রেশন ১২.৫০ ডলার থেকে ৬ ডলারে নামিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ঢাকায় ডব্লিউএফপির এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামনের সপ্তাহগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করলে রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনে কাটছাঁটের বিষয়টি এড়ানো যেতে পারে। ডব্লিউএফপি এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য দাতাদের কাছে ৮১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা চেয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মাথাপিছু ছয় ডলারের রেশন বরাদ্দের ফলে ন্যূনতম বেঁচে থাকার স্তর নিচে নেমে যাবে এবং মৌলিক খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) তহবিল বাতিলের নেতিবাচক প্রভাব এসে পড়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর। কারণ, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে ডব্লিউএফপির অর্থসহায়তার প্রায় ৮০ শতাংশের জোগান আসত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। তবে গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির তহবিল বন্ধের ঘোষণা দেন। এতে ডব্লিউএফপি তহবিল–সংকটে পড়েছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, এই মানুষগুলো রাষ্ট্রহীন, দুর্ভাগ্যগ্রস্ত। শুধুমাত্র তহবিল সংকটের কারণে তাদের আরও দুর্ভোগের শিকার করা উচিত নয়।

বাংলাদেশ বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে, যারা ২০১৬-১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসে। এদের বেশিরভাগই কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে, যেখানে কাজের সুযোগ ও শিক্ষার ব্যবস্থা অত্যন্ত সীমিত।

রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমে যাওয়ায় তীব্র অপুষ্টি দেখা দিতে পারে। গত বছরও যখন রেশন ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল, তখন শরণার্থীদের ৯০ শতাংশ পর্যাপ্ত খাবার পায়নি এবং ১৫% শিশুর মধ্যে তীব্র অপুষ্টি দেখা দিয়েছিল।

আরএইচ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘রামায়ণ’ দেখে কৌশল পাল্টাল ‘গড অব ওয়ার’ নির্মাতারা Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়বো: তাসনিম জারা Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জে আ.লীগ-নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী Jul 16, 2025
img
নিজ বাড়ি থেকে তারকা দম্পতির মরদেহ উদ্ধার Jul 16, 2025
img
বিশ্ব বাজারে বেড়েছে ডলারের মান ও ট্রেজারি বন্ডের সুদহার Jul 16, 2025
img
কিছু কিছু ম্যাচ সারা জীবন মনে থাকে: মোহাম্মদ সিরাজ Jul 16, 2025
img
ঘুষ দিতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় এয়ারপোর্টে দুই বাংলাদেশি আটক Jul 16, 2025
img
‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Jul 16, 2025
img
অভিনেতা রবি তেজার বাবা আর নেই Jul 16, 2025
img
ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে রেখে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় : বিআরটিএ চেয়ারম্যান Jul 16, 2025
img
বিসিবি এবার টাইগারদের জন্য নিয়োগ দিল ‘পাওয়ার হিটিং’-এর জনক Jul 16, 2025
img
লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেটের সময়সূচি ঘোষণা Jul 16, 2025
img
ওমান সাগরে ২০ লাখ লিটার তেলসহ ট্যাংকার জব্দ করলো ইরান Jul 16, 2025
img
ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও দাম কমাতে কাজ করছে সরকার: ফয়েজ আহমদ Jul 16, 2025
img
বিমানবন্দরের মারাত্মক ভুলে করাচির যাত্রী পৌঁছে গেলেন সৌদি Jul 16, 2025
img
কন্যাসন্তান পেয়ে জীবন বদলে গেল: সিদ্ধার্থ Jul 16, 2025
img
র‍্যান্ডম পদ্ধতিতে ১৫ হাজার ৪৯৪টি আয়কর রিটার্ন অডিটে এনবিআরের নির্বাচন Jul 16, 2025
img
‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’ তিন তারকাই এখন কন্যার বাবা-মা Jul 16, 2025
img
বিনোদিনী চরিত্রেই নিজেকে খুঁজে পেলেন শুভশ্রী Jul 16, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করতে ইরানকে আগস্ট পর্যন্ত আলটিমেটাম Jul 16, 2025