জগন্নাথ ধামে এখন শুধুই অভিনয় নয়, যেন এক অভিনব আত্মনিবেদন চলছে। পুরীর পবিত্র মাটিতে চলছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের বহুল আলোচিত ছবি ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’র শুটিং। আর এই ছবির অন্যতম প্রাণভোমরা অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। সৃজিতের ক্যামেরায় তিনি এবার ‘বিনোদিনী’। জগন্নাথ মন্দিরে দাঁড়িয়ে অভিনয়ের মুহূর্তেই চোখ ঝাপসা হয়ে এল তাঁর—শুধু আলো নয়, আবেগেও সিক্ত হলেন অভিনেত্রী।
দশ-বারো বছরের আরাধনা। সেই জগন্নাথ দেবের মন্দিরে, সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয়! যেন এক আধ্যাত্মিক পূর্ণতা পেয়েছেন শুভশ্রী। নিজেই বললেন, ‘‘আমি খুব আবেগপ্রবণ। চরিত্রে একবার ঢুকে গেলে আর নিজেকে আলাদা করতে পারি না। অভিনয়ের সময় এমন কতবার কেঁদে ফেলেছি নিজে থেকেই। গ্লিসারিন কোনও দিন লাগেনি।’’
পুরীতে ছবির গুরুত্বপূর্ণ অংশের শুটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক তারকা। ছবির প্রযোজক রানা সরকার, অভিনেতা ও মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সুরকার-পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত, ইশা সাহা, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়, দিব্যজ্যোতি দত্ত, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ প্রমুখ। সবার দৃষ্টি এখন একটাই দিকে—‘বিনোদিনী’ শুভশ্রীর অভিজ্ঞতায়, সেই রত্ন কতটা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
জরিপাড় সবুজ বালুচরি, গলায়, হাতে প্রাচীন গয়না, মাথায় খোঁপা—পুরনো দিনের সাজে শুভশ্রী যেন হয়ে উঠেছেন এক জীবন্ত চরিত্র। সঙ্গে ছিলেন ‘গিরিশ ঘোষ’ রূপী ব্রাত্য বসু। এক ফ্রেমে ধরা পড়ল এই দুই তারকার মিলনমুহূর্ত।
শুভশ্রী নিজেও জানালেন, এই চরিত্রটি তাঁর অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরা হয়ে থাকবে। “সৃজিতদা আমায় এই চরিত্রে ভেবেছেন, তার জন্য আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ,” বললেন তিনি। এর আগে কলকাতায় মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শ্রীচৈতন্য’ চরিত্রেও ক্যামেরার সামনে ধরা দিয়েছেন শুভশ্রী। এই অংশে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
পুরীজুড়ে এখন শুধু ক্যামেরার আলো নয়, রয়েছে আত্মার আকুলতা। অভিনয়ের ছলে যেন এক আত্মজিজ্ঞাসার দরজা খুলে যাচ্ছে প্রতিটি দৃশ্যে। আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন শুভশ্রী—বিনোদিনীর মেজাজে একেবারে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া এক অভিনেত্রী।
এসএন