ধর্ষণের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ লিখার অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের

ধর্ষণ শব্দটি ব্যবহার না করে নারী নির্যাতন বা নারী নিপীড়ন শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার ভবনে ‘হেল্প’ (হ্যারেজমেন্ট অ্যালিমিনেশন লিটারেসিন প্রোগ্রাম) নামে গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তায় সহায়ক একটি অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি দুইটা শব্দ খুব অপছন্দ করি। আমি অনুরোধ করব এই দুইটা শব্দ বলবেন না। একটা ভুলে গেলাম, একটা এবার বলি। সেটা হল ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার করবেন না প্লিজ। আমাদের শুনতে খুব খারাপ লাগে। আপনারা নারী নির্যাতন বলবেন, নারী নিপীড়ন বলবেন।

তিনি বলেন, আমাদের যে আইনটি আছে এটাও নারী ও শিশু নির্যাতন, এখানেও কোনো এ ধরনের শব্দ নেই। মূল হেডিং নারী ও শিশু নির্যাতন আইন। তাই যে শব্দগুলা শুনতে খারাপ লাগে আমরা না বলি।

গুলি করে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা এক টেলিভিশন চ্যানেলে বার বার দেখানো হচ্ছিল জানিয়ে ডিএমপির পুলিশ প্রধান বলেন, এসবি থেকে রিপোর্ট করছিল, কতবার দেখানো হয়েছে। আমি ওইদিন রিক্যুয়েস্ট করেছি প্রেসকে যে, প্লিজ এ ধরনের ঘটনা, যেগুলো মানুষের মধ্যে প্যানিক সৃষ্টি করে, সেন্স অব ইনসিকিউরিটি ডেভেলপ করে তা দেখাবেন না।আপনারা পেশাগতভাবে এটা প্লিজ দেখবেন। এমন কোনো সিন/অবসিন বিষয় যদি বারংবার না দেখান তাহলে আমার মনে হয় ভালো হয়। অপরাধের ক্ষেত্রে শ্যুটিং হয়ে ছিনতাই হয়েছে, এটা যদি বারে বারে দেখান তাহলে মানুষের মধ্যে সেন্স অব ইনসিকিউরিটি ডেভেলপ করে। তাহলে বোধহয় আর এ শহরে বসবাস করা গেল না। কিন্তু এই যে ঘটনা, এটাতো খুবই কম। শ্যুটিং ইনসিডেন্টের ঘটনা খুবই কম।

ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রোজা শুরুর পর থেকে আমার জানামতে ছিনতাই খুবই কম। একটি রিপোর্ট এসেছে আমাদের কাছে। একজন কল সেন্টারের মহিলা কর্মী, উনি যাচ্ছিলেন, তার ব্যাগটা এক হোন্ডাচালক টান দিয়ে নিয়ে গেছে। তার একটা মোবাইল ছিল, তা নিয়ে গেছে। এছাড়া ছিনতাইয়ের ঘটনা ইনশাল্লাহ নাই। বাকি আমাদের টার্গেট যাতে ঈদ পর্যন্ত ভালো থাকতে পারি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় হেল্প অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনে কোনো নারী সহিংসতার শিকার হলে তাৎক্ষণিক সহায়তা চাইতে পারবেন, জরুরি সেবা নিতে পারবেন এবং ঘটনাটি রিপোর্ট করতে পারবেন।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের উদ্যেগে ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে ঢাকার বছিলা থেকে সায়েদাবাদ সড়কে প্রাথমিকভাবে এটা বাস্তবায়ন হবে।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত চলা বাসে কিউআর কোড স্থাপন ও এই অঞ্চলে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় সহিংসতার শিকার নারীরা এই সেবা নিতে পারবেন।
গণপরিবহনে হেল্প অ্যাপে পাওয়া অভিযোগকে প্রাথমিক অভিযোগ বা এফআইআর হিসেবে ধরে পুলিশ কাজ করবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে কাউকে থানায় যেতে হবে না। এরপর থেকেই যখন কোনো অ্যাকশনের দরকার হবে, এটা ধরেই আমরা মামলা নেব।

এফপি

Share this news on: