চুইংগাম চিবিয়ে মুখের স্বাদ পরিবর্তনের অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। এ ছাড়া মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও অনেকে চুইংগাম চিবিয়ে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রতিটি চুইংগামে শত শত মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে, যা চিবানোর মাধ্যমে সরাসরি মানবদেহে প্রবেশ করে।
দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত চুইংগাম চিবালে বিপুল পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক গিলে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
গবেষণায় যা উঠে এলো
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় ৭টি ভিন্ন ব্র্যান্ডের চুইংগাম পরীক্ষা করা হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, মাত্র এক গ্রাম চুইংগাম চিবালেই গড়ে ১০০টি মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হয়।কিছু চুইংগামে এই সংখ্যা বেড়ে ৬শরও বেশি হতে পারে! সাধারণত একটি চুইংগামের ওজন প্রায় ১.৫ গ্রাম হয়। অর্থাৎ, প্রতিবার চুইংগাম চিবিয়ে মানুষ কয়েকশো মাইক্রোপ্লাস্টিকের টুকরা মুখে নিচ্ছেন।গবেষকদের মতে, যদি কেউ বছরে ১৮০টি চুইংগাম খান, তাহলে প্রায় ৩০হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক গিলে ফেলেন, যা শরীরের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।
চুইংগামে কিভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ চুইংগাম সিন্থেটিক গাম থেকে তৈরি।যাতে পেট্রোলিয়ামভিত্তিক পলিমার ব্যবহার করা হয়। এটি চুইংগামকে চিবানোর মতো নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক করে তোলে। কিন্তু এই পলিমার থেকেই মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি হয়, যা চিবানোর সময় মুখে প্রবেশ করে।গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, গামভিত্তিক উপাদান বলতে প্রায়ই প্লাস্টিক বোঝানো হয়। যদিও এটি প্যাকেজিংয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় না।পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি চুইংগামেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে, যা গবেষকদেরও বিস্মিত করেছে।
মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব
গবেষণায় বলা হয়েছে, ইতোমধ্যেই মানুষের ফুসফুস, রক্ত ও মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যদিও এখনো এর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, প্লাস্টিকের উপস্থিতি শরীরে জটিলতা তৈরি করতে পারে।গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষকে ভয় দেখানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে নিয়মিতভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য কতটা নিরাপদ, তা স্পষ্ট নয়।
বিকল্প কী
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্লাস্টিকভিত্তিক চুইংগামের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি চুইংগাম বেছে নেওয়া ভালো। পাশাপাশি চুইংগাম চিবানোর পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত, যাতে শরীরে প্লাস্টিক প্রবেশের সম্ভাবনা কমে।
এফপি/ এস এন