দ্বিতীয় রাতেও বাইরে ঘুমালেন মিয়ানমারের রাজধানীর বাসিন্দারা

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিদোর উদ্বিগ্ন বহু বাসিন্দা টানা দ্বিতীয় রাত বাড়ির বাইরে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছেন। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো আবার কিছু হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন তারা।

শুক্রবারের ওই ভূমিকম্পে দরিদ্র, গৃহযুদ্ধকবলিত দেশটির বিমানবন্দর, সেতু ও মহাসড়কগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গৃহযুদ্ধের কারণে আগে থেকেই দেশটির অর্থনীতি স্থবির আর লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আছেন; এখন ভয়াবহ ভূমিকম্পে সার্বিক পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসি জানিয়েছে, নেপিদোর বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী আশ্রয় বানিয়ে সেগুলোতে ঘুমিয়েছেন।

ভূমিকম্পের পর থেকে মিয়ানমারের যে ছয়টি এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি আছে নেপিদো তার একটি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এক হাসপাতালের চিকিৎসকরাও রোগীদের খোলা জায়গায় চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা মিয়ানমারের সামরিক সরকার শনিবার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ১৬৪৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৪০৮ জন আহত হয়েছেন আর নিখোঁজ রয়েছেন ১৩৯ জন।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি এতো তীব্র ছিল যে উৎপত্তিস্থল থেকে ১০০০ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩৩তলা একটি ভবন ধসে পড়ে।

সর্বশেষ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংককে মৃতের সংখ্যা ১১ জনে দাঁড়িয়েছে, পাশাপাশি আরও ৩২ জন আহত হয়েছেন এবং ৮৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে থাইল্যান্ডের দমকল বাহিনী ফেইসবুকে এক পোস্টে ব্যাংককের ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরও একজনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১২ জনে দাঁড়ায়।

উভয়ে দেশেই জীবিতদের সন্ধানে দ্বিতীয় রাতেও তল্লাশি অব্যাহত ছিল। প্রিয়জনদের খবর জানার জন্য আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব উদ্বিগ্নভাবে অপেক্ষা করছিলেন। ভূমিকম্পের ৩০ ঘণ্টা পর শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মান্দালয়ে ধ্বংসাবশেষ থেকে এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা অনেকের মধ্যেই আশার সঞ্চার করে।

কিন্তু মিয়ানমারে একদিকে জীবিতদের খোঁজে চলছে উদ্ধার অভিযান অপরদিকে সহিংসতাও অব্যাহত আছে। ভূমিকম্পের কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এমন এলাকাগুলোতেও দেশটির সামরিক বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

দেশটির বিরোধীদলগুলোর গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) জানিয়েছে, তাদের সশস্ত্র বাহিনী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে রোববার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য সব ধরনের আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযান বন্ধ রেখে শুধু আত্মরক্ষার লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবে।

এফপি/এস এন

Share this news on: