এখনকার দিনের স্মার্ট ফোনে ব্যাটারিটাই সব। ব্যাটারি চলে যাওয়ার একটাই অর্থ, ফোনের জীবন শেষ। অনেকে মনে করতেই পারেন, ব্যাটারি তো বদলানো যায়, তাই চিন্তা কী! এ রকম যাঁরা ভাবেন, তাঁদের জন্য দুটো কথা।
প্রথমত, ব্যাটারি যেমন বদলানোই হোক না কেন, সেটা কখনওই অরিজিনালের মতো কাজ করতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, লেটেস্ট যে সব স্মার্ট ফোন আসছে, তাতে ব্যাটারি বদলানোর সুযোগই নেই। তাই ব্যাটারি দেহ রাখলে, সেই ফোনকে সাজিয়ে রেখে সুখের দিনের স্মৃতি খোঁজা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। তাই ফোনের ব্যাটারি নিয়ে সতর্ক হন।
ব্যাটারি বাঁচানো এবং এর আয়ু বাড়ানোর কিছু এফেক্টিভ উপায় আছে। গত সপ্তাহে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম প্রযোজ্য। প্রথমেই সেটা বলে রাখি। কোনও অবস্থাতেই ব্যটারির চার্জ ৮০ শতাংশের বেশি দেবেন না। অনেকের মনে হতে পারে কেন? কারণটা খুব সহজে বলতে গেলে, ব্যাটারির কম চার্জ থাকা আদতে তার আয়ু বাড়ায়। কারণ চার্জিংয়ের সময়ে হিট তৈরি হয়। ভোল্টেজের তারতম্য ঘটে। এতে ক্ষতি হয় মোবাইলের ব্যাটারিতে। সেটা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিই হোক বা সিলিকন-কার্বন। চার্জ কম দিন। আর কোনও ভাবেই সারা রাত মোবাইল চার্জ দিয়ে রাখবেন না। খুব বেশি মোবাইল ব্যবহার করতে হলে পাওয়ার ব্যাঙ্ক বা পাওয়ার চার্জার ব্যবহার করুন।
এ ছাড়াও আরও কিছু টিপস রয়েছে মোবাইলের ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর। সেটা নিয়েই আজকের আলোচনাটা।
চেষ্টা করুন, খুব রোদ বা গরমে মোবাইল পারতপক্ষে ব্যবহার না করতে। কারণ গরম বাড়লে মোবাইল এমনিতেই ওভারহিটের সিগন্যাল দিয়ে কাজে রাশ টানে। তাই এই সময়ে কম ব্যবহার করাই ভালো।
দ্বিতীয়ত, মোবাইলে গেম খেলতে খেলতে বা ভারী কোনও কাজ চলাকালীন যেমন মুভি দেখা কিম্বা গ্রাফিক্স সংক্রান্ত কোনও কাজ করার সময়ে চার্জ দেবেন না। কারণ এই সময়ে চার্জ দ্রুত শেষ হয়। তাই ব্যাটারি দ্রুত চার্জড হওয়ার চেষ্টা করে। এতে প্রচুর হিট হয় এবং ব্যাটারির আয়ুর উপর এর খারাপ প্রভাব ফেলে।
এ ছাড়াও অ্যাপের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ব্যাটারির আয়ু বাড়ানো যায়। অনেকেরই ধারণা আছে, অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে এবং এতে বেশি ব্যাটারি খরচ হয়। তাই অনেকেই অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড বন্ধ রাখেন। অথবা অ্যাপ স্ক্রিন থেকে রিমুভ করে দেন। এটা করা বন্ধ করতে হবে। কারণ ব্যাকগ্রাউন্ড বন্ধ করা কোনও অ্যাপ ফের চালু করলে স্টোরেজ থেকে এই অ্যাপ রিলঞ্চ করে চালু হয়। এতে প্রচুর ব্যাটারি খরচ হয় এবং প্রচুর হিট উৎপন্ন হয়। যা মোবাইলের ক্ষতি করে। কখনওই এমনটা করা উচিত নয়। কারণ আধুনিক অ্যানড্রয়েড ফোনে এমন বেশ কিছু ফিচার আছে যা অটোমেটিক্যালি অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড ফ্রিজ় করে এবং একে ডিপ স্লিপে পাঠিয়ে দেয়।
কিছু অ্যাপ থাকে যেগুলো অ্যাক্টিভ। এই অ্যাপগুলি ব্যাটারি বেশি খরচ করে। এগুলোর নিয়ন্ত্রণ খুবই প্রয়োজন। এর জন্য সেটিংসে গিয়ে অ্যাক্টিভ অ্যাপ অপশন সিলেক্ট করুন। সেখানে গিয়ে স্টপ অপশন পাবেন। এই অপশন ক্লিক করলে এই অ্যাপগুলি ব্যাটারি খরচ বন্ধ করে দেবে। যখন আপনি আবার এই অ্যাপগুলি চালু করবেন, তখন নিজের মতো করে এগুলি চালু হয়ে যাবে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে নিশ্চিত ভাবেই ব্যাটারির আয়ু বাড়বে।
এফপি/টিএ