শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা হুমকি চীনের

চীন যুক্তরাষ্ট্রকে দ্রুত তাদের একতরফাভাবে আরোপ করা শুল্ক বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে যে, ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে তারা ‘দৃঢ় পাল্টা ব্যবস্থা’ নেবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তাদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বেইজিং হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র এই ‘অন্যায্য’ শুল্ক বাতিল না করে, তবে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। খবর সিএনবিসি।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে তথাকথিত ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করেছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিধির লঙ্ঘন এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বৈধ স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর।

চীনের এই প্রতিক্রিয়া এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘শতাব্দীর সবচেয়ে কঠোর শুল্ক বৃদ্ধির’ ঘোষণা দিয়েছেন। চীনা কর্মকর্তারা এই শুল্ক নীতিকে ‘একতরফা বলপ্রয়োগের উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন, বিশ্বের বহু দেশই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

এর আগে, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে ‘আত্মঘাতী’ বলে মন্তব্য করেছে। তারা অভিযোগ করেছে যে ট্রাম্প বাণিজ্যকে প্রতিশোধমূলক কৌশলে পরিণত করছেন।

স্থানীয় সময় ২ এপ্রিল, হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প নতুন শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করেন। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বেশিরভাগ দেশের জন্য শুল্ক হার ১০% থেকে ৫০% পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে।

নতুন শুল্ক নীতির আওতায় চীনের পণ্যের ওপর ৩৪% শুল্ক, ভারতের জন্য ২৭%, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য ২০% এবং ভিয়েতনামের জন্য ৪৬% শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্যও নতুন চ্যালেঞ্জ বয়ে আনতে পারে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন একে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং বলছে, এই সিদ্ধান্ত দেশটির শিল্প খাতকে রক্ষা করবে।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মব তৈরি করে জামায়াত নেতাকে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ Jul 06, 2025
img
নয়জনের দল নিয়েও বায়ার্নকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পিএসজি Jul 06, 2025
img
মুন্সীগঞ্জে দলিল লেখকপট্টিতে ভয়াবহ আগুন Jul 06, 2025
img
সদিচ্ছা না থাকলে উপদেষ্টার চেয়ার ছেড়ে দিন: রিফাত রশীদ Jul 06, 2025
img
সংসদ নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই : গয়েশ্বর Jul 06, 2025
img
পিআর নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নামে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ড ভুয়া Jul 06, 2025
img
‘আমেরিকা পার্টি’ নিয়ে ইলন মাস্কের জনমত জরিপে ৬৫% সমর্থন Jul 06, 2025
img
হাতিরঝিলে রাতের আঁধারে হবে নারী দলের অভিনব সংবর্ধনা Jul 06, 2025
img
‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’ নামটাই যেন ঋতুপর্ণার পুরো চরিত্র Jul 06, 2025
img
অস্ত্রোপচারের পর বিশ্রামে দীপিকা কক্কর, মানতে হচ্ছে কড়া নিয়ম Jul 06, 2025
img
আজ পবিত্র আশুরা Jul 06, 2025
img
বিচার, সংস্কার এবং নতুন সংবিধানই হচ্ছে আমাদের প্রধান দাবি : নাহিদ ইসলাম Jul 06, 2025
img
প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক উৎসবমুখর নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বিএনপি : প্রিন্স Jul 06, 2025
img
পিআরের বিরোধিতা করতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভেঙেছেন : মারুফ Jul 06, 2025
img
‘বোলাররাই মার খায়, তুই পারবি’, তানভিরকে বলেছিলেন মিরাজ Jul 06, 2025
img
পাহাড়ি মেলার মাধ্যমে আমরা ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছি : উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা Jul 06, 2025
img
ইসলামি দলগুলোর কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নাই : বিএনপি নেতা হারুন Jul 06, 2025
img
সারজিসের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের দাবিটি ভুয়া Jul 06, 2025
img
বিশ্বাস ছিল যে ২৪৮ রান আমরা ডিফেন্ড করতে পারব : মিরাজ Jul 06, 2025
img
আরব্য রজনীর রূপে নেটিজেনদের নজর কাড়লেন টিনা দত্ত Jul 06, 2025