প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি পণ্যের উপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছেন। মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সামলাতে আমেরিকানরা এখন কেবল একটা কাজই করছেন -যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাজার থেকে জিনিস কিনে মজুত করে রাখা। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারা পোশাক, জুতা, আসবাবপত্র এবং কফির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এবং তারা কোনও কিছুকেই সুযোগের উপর ছেড়ে দিচ্ছেন না। যারা কিছুটা ভাবনাচিন্তা করে গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ,তারা এখন শুল্ক আরোপের সময় উচ্চ মূল্য এড়াতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সংগৃহীত গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । শুল্ক আরোপের আগে আমেরিকানরা যেসব জিনিসপত্র মজুদ করছে তার তালিকা:
ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোন
ট্রাম্প তাইওয়ান থেকে আমদানিতে ৩২ শতাংশ এবং চীন থেকে আমদানিতে ৫২ শতাংশ কর আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই, আমেরিকানরা ট্যাবলেট, স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ কিনতে ছুটে যাচ্ছেন বাজারে । এর সরঞ্জামগুলো বেশিরভাগই বিদেশ থেকে, বিশেষ করে চীন থেকে আসে।
পোশাক এবং জুতা
গ্যাপের মতো প্রধান পোশাক ব্র্যান্ডগুলো ভিয়েতনাম থেকে প্রায় ২১ শতাংশ এবং ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ থেকে ৩৭ শতাংশ পোশাক সংগ্রহ করে। আরেকটি জনপ্রিয় পোশাক ব্র্যান্ড, এইচএন্ডএম চীন এবং বাংলাদেশে তাদের বেশিরভাগ পোশাক তৈরি করায় । তাই, শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে আমেরিকানরা জিন্স, স্পোর্টসওয়্যার এবং জুতা কিনছে।
অটোমোবাইল
যেসব আমেরিকানরা নতুন গাড়ি বা আপডেটেড মডেল, যার মধ্যে ইভিও রয়েছে, কিনতে দেরি করছিলেন, তারা এখন আমদানি করা গাড়ি কিনতে শোরুমে ছুটে যাচ্ছেন। দাম বাড়ার আগেই গ্রাহকরা অফারগুলো দেখে তা কিনে রাখার চেষ্টা করছেন।
বিদেশি খাবার
বিদেশ থেকে আমদানি করা কফি, খাবার, মশলা এবং অন্যান্য মুদিখানার জিনিসপত্রও মানুষের তালিকায় রয়েছে। শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর, এই জিনিসপত্রগুলো ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। তাই লোকেরা যা কিছু সম্ভব তা মজুদ করছে।
জিমের সরঞ্জাম
ট্রেডমিল, স্টেশনারি বাইক, ম্যাসাজ চেয়ার এবং অন্যান্য জিম সরঞ্জাম হয় আমদানি করা হয় অথবা বিভিন্ন দেশ থেকে সরঞ্জাম আনিয়ে বানানো হয়। যেহেতু এগুলো ব্যয়বহুল হতে পারে, তাই মানুষ মনে করছে এখনই এগুলো কিনে রাখার সঠিক সময়।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি
দাম বাড়ার আগেই আমেরিকানরা রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ এবং ডিশওয়াশারের মতো গৃহস্থালীর জিনিস কিনতে দোকানে লাইন দিচ্ছে। বেশ কিছু গৃহস্থালীর যন্ত্রপাতির যন্ত্রাংশ চীন বা তাইওয়ান থেকে আমদানি করা হয় এবং শীঘ্রই তাদের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যান্য আইটেম
অন্যান্য জিনিসপত্রের মধ্যে, আমেরিকানরা বিল্ডিং এবং সংস্কারের উপকরণ, রান্নাঘরের যন্ত্রপাতি এমনকি শিশুদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনে রাখছে । যেহেতু ডায়াপার, খেলনা, শিশুদের পোশাক এবং স্ট্রলার সাধারণত আমদানি করা হয়, তাই শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরে এগুলো ব্যয়বহুল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে,প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন শিল্পের জন্য "মুক্তি দিবস" হিসেবে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো মার্কিন মিত্র সহ প্রায় সকল দেশের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন। শনিবার, মেক্সিকো এবং কানাডা ছাড়া বেশিরভাগ মার্কিন আমদানির উপর ১০ শতাংশ "বেসলাইন" শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ৯ এপ্রিল থেকে প্রায় ৬০টি মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের উপর উচ্চতর শুল্ক আরোপ করা হবে। এএফপি জানিয়েছে, আমেরিকান আমদানির উপর তারা কী চার্জ করে তার উপর ভিত্তি করে প্রতিটি জিনিসের জন্য উপযুক্ত হার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসএম/টিএ