রাজৈরে ধারাবাহিক সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

মাদারীপুরের রাজৈরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা সংঘর্ষস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে একটি লিখিত আদেশনামার মাধ্যমে এ আইন জারি করেন রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহফুজুল হক। আজ সোমবার দুপুর ১ টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এই ১২ ঘণ্টা এ আদেশ বহাল থাকবে।

গতকাল রবিবার রাতে উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে চতুর্থ দিনের মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এতে পুলিশসহ আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের ৪০ জন।

আদেশনামায় বলা হয়, প্রায় ৭ দিন যাবত রাজৈর বাজার সংলগ্ন পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিয়মিত বিরতীতে দেশীয় অস্ত্রসহ মারামারি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও অস্ত্র প্রদর্শনী বিভিন্ন দাঙ্গা–হাঙ্গামা চলছে। এ সকল আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারী এবং শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনে ফৌজদারী কার্যবিধি মতে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। এ মোতাবেক রাজৈর বাজার, পশ্চিম রাজৈর, বদরপাশা ও গোপালগঞ্জ গ্রামে এক বা একাধিক ব্যক্তি চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, মাইকের ব্যবহার, লাঠিসোঁটা বা যেকোনো প্রকারের আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

দায়িত্ব পালনরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রে এ আদেশ শিথিল থাকবে বলে লিখিত আদেশে জানানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী সময় গত ২ এপ্রিল রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর ফুচকা ব্রিজ এলাকায় বাজি ফাটায় বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ আকন ও তার বন্ধুরা। এ সময় ওই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তার বন্ধুরা মিলে তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এর জেরে গত ৩ এপ্রিল সকালে রাজৈর বেপারিপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় জুনায়েদ ও তার লোকজন। পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই অনিক খান (৩১) বাদী হয়ে জুনায়েদসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি মামলা করেন।

গতকাল রবিবার (১৩ এপ্রিল) রা‌তে চতুর্থ দিনের মতো দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।পরে খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এতে পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, বাকিদের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ