যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পুনরায় চালুর জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, মার্কিন বাজার থেকে আমদানি বাড়াতে দেশটির জ্বালানি খাতের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি ও মেশিনারিজ আমদানি করলে দুই দেশের বাণিজ্য ভারসাম্যতা বজায় রাখা সহজ হবে। তবে ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে স্বাভাবিক বাণিজ্য এবং জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আগামী শনিবার তিনি বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর বৈঠকে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। সফরে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি (USTR), বিনিয়োগকারী ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের সেই উদ্যোগের অংশ, যার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৭ শতাংশ শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের গুণগত মান ভালো, তাই জিএসপি সুবিধা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও শ্রম আইন ও ট্রেড ইউনিয়ন বিষয়ক কিছু শর্ত রয়েছে। তিনি আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে রপ্তানি বহুমুখীকরণে মনোযোগ দেওয়ার কথাও বলেন।
আন্তর্জাতিক বৈঠকে প্রস্তাব:
যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং ওপেক ফান্ডের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। বাজেট সহায়তার প্রস্তাবও দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাংক ও ওপেক ফান্ডের সঙ্গে দুটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) এবং রূপপুর প্রকল্পে অর্থ পরিশোধসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে ইউএস ট্রেজারির সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বৈঠকের বাইরেও তিনি বিশ্বের শীর্ষ ৭০টি কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) নিয়ে আলোচনা হবে। একইসঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগে আগ্রহী আটলান্টিক কাউন্সিলের সঙ্গেও যোগাযোগ করবেন তিনি।
সরকারি ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্ত:
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর জন্য সরকার ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সয়াবিন তেলের দাম: প্রতি লিটার ১৬৫.৮৫ টাকা
রাইস ব্রান তেলের দাম: প্রতি লিটার ১৬১ টাকা
সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয়: ৩৬৫ কোটি টাকা
রাইস ব্রান তেল ক্রয়ে ব্যয়: ১৭৭ কোটি টাকা
এছাড়া দুইটি এলএনজি কার্গো আমদানিতে আরও ১,১৩৭ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এসএস