এক মাসে রুপির দর সর্বনিম্ন

ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযান শুরু হয় বুধবার মধ্যরাতে। এ অভিযানের আওতায় পাকিস্তানের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালায় ভারত। ভূ-রাজনৈতিক এই সংঘাতের প্রভাবে ভারতীয় রুপির দর কমেছে ০.৫ শতাংশ।

গতকাল বুধবার (৭ মে) প্রতি ডলারের বিপরীতে পাওয়া যায় ৮৪.৮২ রুপি।

গত এক মাসের মধ্যে রুপির এই দর সর্বনিম্ন। ডলারের বিপরীতে রুপির দুর্বলতা ভারতের জ্বালানি আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। রুপির দরপতন বিষয়ে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ট্রেজারি প্রধান অনিল বনশালি বলেন, ‘আমদানিকারকরা উদ্বিগ্ন হয়ে ডলার কিনে রাখতে পারে। তবে আমরা এটুকু বলতে চাই, রুপির বড় ধরনের দরপতন ঠেকাতে আরবিআই হস্তক্ষেপ করবে।

বৈদেশিক মুদ্রা ও রিজার্ভের অবস্থান রুপির অতিরিক্ত পতন রোধ করতে পারে।’

ভারতের শেয়ারবাজারে প্রভাব পড়েনি : পাকিস্তানে হামলার জের ধরে ভারতের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন হয়নি। ভারতের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পরই বাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্সের পতন হয়। পতন হয়েছে আরেক সূচক নিফটিরও।

এরপর অবশ্য বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল সকালে সেনসেক্স সূচক ৬৯২ পয়েন্ট কমলেও পরে তা ২০০ পয়েন্টের বেশি বাড়ে। গতকাল সেনসেক্স সূচকের মান ছিল ৮০ হাজার ৭৪৬.৭৮ পয়েন্ট। আগের দিনের তুলনায় গতকাল এই সূচকের উত্থান হয় ১০৫.৭১ পয়েন্ট বা ০.১৩ শতাংশ। নিফটি ৫০ সূচকের মান ছিল ২৪ হাজার ৪১৪.৮৫ পয়েন্ট।

নিফটির সূচক বাড়ে ৩৪.৮০ পয়েন্ট বা ০.১৪ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরকে ঘিরে টেক্সটাইল কম্পানির শেয়ার মূল্য সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়।

আস্থা রাখছেন বিনিয়োগকারীরা : কারগিল যুদ্ধের (১৯৯৯) পর এক বছরের মধ্যে সেনসেক্স সূচক বাড়ে ৬৩ শতাংশ। মুম্বাই হামলার (২০০৮) পর ১২ মাসে সূচক বাড়ে ৬০ শতাংশ। এ থেকে স্পষ্ট, যুদ্ধাবস্থার মধ্যে থেকেও ভারতের শেয়ারবাজারে স্থিরতা বজায় ছিল। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। পহেলগাম হামলার পর ভারতীয় শেয়ারবাজারে ধারাবাহিকভাবে সূচকের উত্থান দেখা যায়। এ ছাড়াও ভারতের দাবি, তারা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। হামলার তীব্রতা বৃদ্ধিতে তারা ইচ্ছুক নয়—এই বার্তাও সূচকের পতন রোধে ভূমিকা রেখেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও ভারতের উৎপাদনশীলতা ঘিরে বাকি বিশ্বের আকর্ষণের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে অনিশ্চয়তা : অন্যদিকে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে সূচকের পতন ঘটেছে। পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ বা কেএসই-১০০ সূচকের পতন হয় ৬,২৭২ পয়েন্ট বা ৬ শতাংশ। ২০২৩ সালের পর থেকে এক দিনের হিসাবে এটাই সবচেয়ে বড় পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর জেরে সূচক নেমে আসে ১ লাখ ৭ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে। গত মঙ্গলবার লেনদেন শেষে সূচক ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৮ পয়েন্ট। গত ২৩ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কেএসই-১০০ সূচকের পতন ঘটে ৩.৭ শতাংশ। এই পতনের মূলে ছিল সামরিক সংঘাতের শঙ্কা।

এদিকে এশিয়ার শেয়ার সূচকগুলোর মধ্যে হ্যাং সেং সূচক বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। পতন হয়েছে নিক্কেই এশিয়া সূচকের। সূচকটির পতন হয়েছে ০.৩ শতাংশ।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাম্পের এক হুঁশিয়ারিতে পুতিনের সাথে আলোচনায় বসতে রাজি জেলেনস্কি May 12, 2025
img
তাপপ্রবাহ কমছে সোমবার থেকে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর May 12, 2025
img
লিভারপুল-আর্সেনালের নাটকীয় ড্র, শিরোপা নিশ্চিত লিভারপুলের May 12, 2025
img
আমি বৃহস্পতিবার তুরস্কে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করব : জেলেনস্কি May 12, 2025
img
সোমবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল May 12, 2025
img
দিল্লির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি পিন্ডির দাসত্ব করতে নয়: আসিফ মাহমুদ May 12, 2025
img
দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ, জনসুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা May 12, 2025
এবার জাতীয় পার্টির জি.এম. কাদেরকে হুঁশিয়ারি হান্নান মাসুদের May 12, 2025
ধসে পড়লো বাজার, বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত May 12, 2025
কেন বাবার মৃত্যুর পর হাসতে হয়েছিল সামান্থাকে? May 12, 2025