পাকিস্তানের সম্ভাব্য আক্রমণের সতর্কবার্তা হিসেবে চণ্ডিগড়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সাইরেন বাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে আকাশ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি চণ্ডিগড়ের বাসিন্দাদের ঘরে ভেতরে থাকতে এবং বরান্দা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়াটুডের ।
শুক্রবার (৯ মে) সকালে চণ্ডিগড় প্রশাসনের এক্স হ্যান্ডেলে এই তথ্য জানানো হয়।
জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু অংশে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা এবং পাঞ্জাবের পাঠানকোটে গোলাবর্ষণের পর গত সন্ধ্যায় চণ্ডিগড়েও একই রকম সাইরেন বাজানো এবং ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছিল।
এদিকে ‘জরুরি পরিস্থিতির’ কারণে শুক্রবার এবং শনিবার চণ্ডিগড়ের সব বেসরকারি ও সরকারি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।
অপরদিকে বাথিন্দা গুরুদুয়ারার জনগণকে তাদের ঘর থেকে বের না হতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাথিন্দার বিডে যে ক্ষেপণাস্ত্রের অংশগুলি পড়েছে তা নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা এবং হীরানগরে পাকিস্তান কমপক্ষে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। জম্মুর ওপর দিয়েও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। রাজস্থানের জয়সলমীর, পাঞ্জাবের অমৃতসর এবং হরিয়ানার পঞ্চকুলায়ও ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আট এবং ৯ মে মধ্যরাতে পশ্চিম সীমান্তে ড্রোন এবং অন্য অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী ‘একাধিক আক্রমণ’ চালিয়েছে।
এক্সে এক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানি সেনারা জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অসংখ্য যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন (সিএফভি) করেছে। ড্রোন হামলা কার্যকরভাবে প্রতিহত এবং সিএফভিদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবারের মধ্যরাতে, পাকিস্তান ভারতের ১৫টি স্থানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। যার মধ্যে ছিল অবন্তীপোরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথলা, জলন্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, বাথিন্ডা, চণ্ডিগড়, নল, ফালোদি, উত্তরলাই এবং ভূজ। তবে হামলার ব্যাপারে এখন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে পাকিস্তান।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনগুলো নিষ্ক্রিয় করেছে এবং পাকিস্তানের আক্রমণের প্রমাণ হিসেবে ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী লাহোরসহ পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা রাডার এবং সিস্টেমগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এই সপ্তাহে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে অভিযান শুরুর পর থেকে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) একাধিক সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস করেছে।
এদিকে সাম্বা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সয় সাত সন্ত্রাসীকে হত্যার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দাবি, নিহতদের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে যোগসূত্র ছিল।
টিকে/টিএ