বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের যথাযথ উন্নয়ন হলে চিকিৎসার জন্য ভারতমুখী হওয়ার প্রয়োজন হতো না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ন্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক যদি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হতো, তাহলে দেশ অনেক উন্নতি করত। কেন আমি ডলার খরচ করে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাব? কেন তাদের টাকা দিয়ে আসব? তারা তো আমাদের নিয়ে প্রতিনিয়ত নেতিবাচক প্রচার চালায়। অথচ সেই টাকাগুলো নিজেদের ডাক্তার-নার্সদের উন্নয়নে ব্যয় করলে বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজনই থাকত না।”
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, “আপনারা অনেকদূর ভেবে সিদ্ধান্ত নিন। আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলে বড় বিপদ হতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কল্যাণখাতে এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”
নার্সদের প্রশংসা করে রিজভী বলেন, “আমি রাজনৈতিক কারণে হাসপাতালে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। সেখানেই নার্সদের সেবার যে মহিমান্বিত রূপ দেখেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেবা মায়ের সেবা, আর নার্সরাই তা প্রদান করেন। কিন্তু আমাদের সমাজে নার্সদের হেয় করা হয়, তাদের প্রতি রয়েছে বৈষম্য। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই নার্সরা আবাসনসহ নানা মৌলিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত।”
তিনি আরও বলেন, “উড়াল সেতু, মেগা প্রকল্প—এসব চিবিয়ে খাব নাকি? মানবসম্পদের উন্নয়ন না হলে এসব দিয়ে কোনো লাভ নেই। স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব না দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। করোনার সময় যেভাবে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি হয়েছে, তার প্রধান অভিযুক্ত এখন জেলে।”
আসন্ন বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাত কীভাবে গুরুত্ব পাবে, কিন্তু এটি সবচেয়ে জরুরি খাত। ডাক্তারদের যেমন দরকার, তেমনি নার্সদের জন্যও যথাযথ লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকী। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
এসএস/টিএ