ব্যবসায়ীদের আহাজারি না শুনলে ঈদের পর ফ্যাক্টরিও কোরবানি দিতে হতে পারে: আবদুল্লাহ আল মামুন

গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ঋণের সংকট দূর না হলে ঈদের পরে দেশের শিল্প কারখানা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আহাজারি না শুনলে ঈদের পর কোরবানির পশুর সঙ্গে সঙ্গে হয়তো ফ্যাক্টরিও কোরবানি দিতে হবে।’

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বর্তমানে আমরা গ্যাস পাচ্ছি না, বিদ্যুৎও অনিয়মিত। তার ওপর ব্যাংকগুলোতে অর্থসংকট চলছে। অথচ আমাদের নির্ধারিত সময়েই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে, উচ্চ সুদের হারেও ঋণ শোধ করতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প খাতে আমরাই কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছি। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমরা বড় ভূমিকা রাখছি। অথচ আমাদের কষ্ট কেউ বুঝতে চায় না। যারা দেশ নিয়ে বড় বড় কথা বলত, তারা তো দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কেউ লন্ডনে, কেউ থাইল্যান্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

বিটিএমএ পরিচালক সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই দেশের টেক্সটাইল খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সঙ্গে বাস্তবভিত্তিক এবং অংশগ্রহণমূলক সমঝোতায় আসতে হবে। শুধু বক্তৃতা দিয়ে হবে না।’

প্রতিযোগী দেশগুলোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশে যদি কেউ ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে, সরকার সেখানে ৪০ কোটি টাকা অনুদান দেয়, যা ফেরত দিতে হয় না। আর আমাদের এখানে ১৮ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ নিতে হয়। গ্যাসের সংযোগ পেতে জমা দিতে হয় অতিরিক্ত ডিপোজিট। আমার একটি ছোট ফ্যাক্টরির গ্যাস বিল ২ কোটি টাকা হলেও ডিপোজিট দিতে হয়েছে ১০ কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমাদের শিল্পের প্রাণ। কিন্তু এখানে আমাদের নিজের পয়সায় বয়লার বসাতে হয়, সব ব্যবস্থাও করতে হয়। অথচ অন্য দেশে সরকারই সরাসরি দরজায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয় এবং সেখানে ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিদ্যুতের দাম গ্রাহকের চেয়ে কম, সাবসিডি রেটে।’

সংবাদ সম্মেলনে আবেগঘনভাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এক সহকর্মী বলেছেন, আমরা আমাদের জীবনভর সঞ্চয় দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের কষ্ট বুঝতে চাইছে না কেউ। এখনই সময় আমাদের কথাগুলো গুরুত্বসহকারে শোনার।’

সংকট অব্যাহত থাকলে ঈদের পর শিল্প খাতেই কোরবানি হয়ে যেতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন। তবে তিনি আশাবাদী, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে আবার উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিপিএলের প্রস্তুতিতে মুখোমুখি রংপুর-রাজশাহী Dec 22, 2025
img
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা Dec 22, 2025
img
তারেক রহমানকে সংবর্ধনায় প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ Dec 22, 2025
img
নাইজেরিয়ায় মুক্তি পেল অপহৃত ১৩০ শিক্ষার্থী Dec 22, 2025
img
ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা শনাক্ত করল বাংলাফ্যাক্ট Dec 22, 2025
img
ঢাকাবাসীর জন্য বড় সুখবর মেট্রোরেল কার্ড রিচার্জে Dec 22, 2025
img
মঞ্চ থেকে কারাগারের পথে মার্কিন র‍্যাপার Dec 22, 2025
img
বুন্দেসলিগায় কেইনের দ্রুততম ‘সেঞ্চুরি’ Dec 22, 2025
img
১৬ বছর পর ভাঙল অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের সংসার Dec 22, 2025
img
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ Dec 22, 2025
img
সাবেক সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই Dec 22, 2025
img
খালাস চেয়ে সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল Dec 22, 2025
img
৪৫তম ম্যাচসেরা পুরস্কার নিয়ে রশিদ-হেলসের সাথে সাকিব Dec 22, 2025
img
সালাহউদ্দিন আম্মারকে মব-সন্ত্রাসী আখ্যা দিল রাবি ছাত্রদল Dec 22, 2025
img
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক প্রদান সৌদি আরবের Dec 22, 2025
img
ভোট দেওয়ার জন্য ৫ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি প্রবাসীর নিবন্ধন Dec 22, 2025
img
অস্ত্রোপচার শেষে পেটে ব্যান্ডেজ নিয়েই শুটিংয়ে ইমরান হাশমি Dec 22, 2025
img
নীলফামারীতে তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রির ঘরে, বাড়ছে শীতের দাপট Dec 22, 2025
img
এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে ভারতীয় হাইকমিশনের শোক প্রকাশ Dec 22, 2025
img
লামিনে ইয়ামালের বিশ্বসেরা হওয়ার পথে ব্যক্তিগত জীবনের টিপস Dec 22, 2025