প্রাইমারি শিক্ষকদের আন্দোলন, সচিবালয়ে আন্দোলন, রাজনৈতিক আন্দোলন, দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি, এই আন্দোলন সেই আন্দোলন— গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের চিত্র এটি। আর এমন নানামুখী আন্দোলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার চাপে পড়েছে বলে সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
তারা বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের মধ্যে সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা যোগ দিয়েছেন। গত বছর ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে ১৭ কোটি জনগণের দেশের নেতৃত্ব নেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কিন্তু ইউনূস প্রশাসন সরকারি কর্মচারি, শিক্ষক, রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীর চাপে পড়েছেন। যখন অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি দেশটি একটি ভঙ্গুর পরিবর্তনের মধ্যে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে।
সরকারি অধ্যাদেশের কথা উল্লেখ করে বার্তাসংস্থাটি বলেছে, গত রোববার বাংলাদেশের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অপরাধ করা সরকারি চাকরিজীবীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের ব্যাপারে অধ্যাদেশ জারি করেছে তখন তা আমলাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। এই সরকারি চাকরিজীবীরা সোমবার পর্যন্ত টানা দিন ধরে অধ্যাদেশটি প্রত্যাহারে দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুই ভাগে ভাগ করার জেরে সংস্থাটির কর্মচারিদের আন্দোলনের মুখে গত রোববার অন্তর্বর্তী সরকার এটি প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
এছাড়া গত সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা পোষণ করার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ পরবর্তীতে জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না।
রয়টার্স জানিয়েছে, সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবির মধ্যে আটকা পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারা উল্লেখ করেছে, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছেন; সেখানে বিএনপি নেতা তারেক রহমান ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনে চাপ দিচ্ছেন।
এছাড়া গত সপ্তাহে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের তাগাদা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ আরও বৃদ্ধি করেছেন বলে দাবি করেছে রয়টার্স। তারা বলেছে, সেনাপ্রধান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেছেন।
এরপর গত শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আলোচনার বিষয়টিও রয়টার্সের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।
সূত্র: রয়টার্স
টিকে/টিএ