প্রায় দুই বছর পর হাওড়, দ্বীপ ও চর অঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুখে আবারও হাসি ফুটেছে। আগামী জুলাই মাস থেকে ফের বিশেষ ভাতা আবার চালু করতে যাচ্ছে সরকার। যা ২০২২ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য এলাকাগুলো হচ্ছে — সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ হাওড়-চর এলাকা।
সম্প্রতি, এই ভাতা পুনরায় চালু করার ঘোষণা এসেছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। যার অনুলিপি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. ফেরদৌস আলমের সই করা ওই প্রজ্ঞাপনে হাওড়/দ্বীপ/চর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দাদের নিজ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন ভাতা না পাওয়ার পূর্বশর্তটিও বাতিল করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গণশিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশ এবং শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, এই ভাতা পুনরায় চালু হওয়ায় এসব দুর্গম অঞ্চলে শিক্ষক নিয়োগ এবং ধরে রাখা অনেক সহজ হবে। নতুন শিক্ষকরাও সেখানে কাজ করতে আগ্রহী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত, হাওড়, দ্বীপ ও চর অঞ্চলের ভৌগোলিক প্রতিকূলতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার কারণে এসব এলাকায় শিক্ষকতা করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।
অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ভাতা ফেরানোর দাবি করে আসছিলাম। সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের শুধু আর্থিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও চাঙা করবে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের প্রায় ২৫টি উপজেলায় বিস্তৃত হাওড়, চর এবং দ্বীপ এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক পাঠানো এবং ধরে রাখাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ ভাতা চালুর ফলে এসব অঞ্চলের শিক্ষার মানোন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরআর/এসএন