বান্দরবানে টানা বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে লামা উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। লামা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকে রোববার (১ জুন) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দিন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন , কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢালুতে অবস্থিত রিসোর্টগুলোতে ঝুঁকি বৃদ্ধি ও প্রাণহানির আশঙ্কায় মিরিঞ্জা ভ্যালি, সুখিয়া ভ্যালিসহ লামার বিভিন্ন পর্যটন স্পটের ৬০টি রিসোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলায় ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল। তিনি বলেন , অতি ভরী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পাশাপাশি আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকবে। জেলা ও উপজেলায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
পর্যটন স্পট , রিসোর্ট ও কটেজ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন লামা পর্যটন মালিক সমিতি। আবহাওয়ার উন্নতি হলে ঈদুল আজহার আগে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
লামা পর্যটন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাদেকুল মাওলা বলেন , বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে ঈদের আগে দ্রুত এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছি প্রশাসনের কাছে। লামার পর্যটন শিল্পে যেন কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পরে এ জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এদিকে দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলা ২টি পৌরসভা ও ৩৪টি ইউনিয়নে স্থানী প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, গ্রাম পুলিশের পক্ষ হতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জনসচেতনতায় মাইকিং অব্যাহত আছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পৃথক দুর্ঘটনায় আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় দুইজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামল দেওয়ার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। পাহাড় ও অধ্যুষিত ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সড়ে যেতে বলা হচ্ছে। রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এখনো বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে।
কেএন/এসএন