ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা উজানি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে।
সোমবার (২ জুন) দপুর ১২টা পর্যন্ত নদী দুটির চারটি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জানা যায়, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বইছে ১৩ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায়। যেখানে বিপৎসীমার হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫।
অমলশিদে কুশিয়ারা নদীর পানি বইছে ১৭ দশমিক ২৫ মিটার উচ্চতায়, যেখান বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০। শেওলায় কুশিয়ারা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায় বইছে, যেখানে বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৪৬ মিটার ওপরে।
ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বইছে ৯ দশমিক ৭৯ মিটার দিয়ে যা বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৩৪ মিটার ওপরে রয়েছে।
পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে উজানের ঢলের প্রভাব বেশি পড়ছে সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলোতে।
এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা ছাড়াও জেলার ধলাই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো—সারি, ডাউকি ও সারি-গোয়াইন নদ-নদীর পানি কমতির দিকে।
জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ভারতের দিক থেকে হঠাৎ করে ঢল নামায় কুশিয়ারা নদীর পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড়ঘেঁষে অনেক ঘরবাড়ি আছে, এখনই পানি না নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত হওয়ার ভয় আছে। আগে থেকে যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। নিচু এলাকা ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। প্রত্যন্ত ও প্লাবনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
আরএম/এসএন