বিয়ের পর অভিনয়ে ফিরে আরও শক্তিশালী শুভশ্রী, বললেন নিজের বদলের গল্প

এক জন মানুষের জীবনে ঠিক কী কী চাহিদা থাকতে পারে? বাধা গতে ,শান্তিপূর্ণ পরিবার, জীবনের যাবতীয় শখ-ইচ্ছা পূরণ করার সামর্থ্য আর সেই সামর্থ্য তৈরি করার জন্য একটা সুন্দর পরিসর। এই সব ক’টি বাক্সে ‘টিক’ চিহ্ন দেওয়া গেলেই জীবন নাকি পরিপূর্ণ!

তার জীবন কি পরিপূর্ণ? তার অভিনয় বয়স ১৮ বছর। বহু চরাই উতরাই পার করেছেন। এখন তাকে দেখলে অনেকেরই মনে হয় ‘জীবনটা যদি শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো হত!’ অনেক সাক্ষাৎকারে বার বার অভিনেত্রী বলেন স্বামী রাজ চক্রবর্তী তার মধ্যে থাকা অভিনেত্রী সত্তাকে খুঁড়ে বের করেছেন। ২০১৮ সালের ১১ মে –এর আগে এক শুভশ্রীকে দেখতে অভ্যস্ত ছিল দর্শক। বিয়ের পর নায়িকা আরও পরিণত। দুই সন্তানের মা। আগের চেয়ে কাজের পরিমাণ বেশি। শুভশ্রীর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়—

জীবন কি সত্যিই ‘পারফেক্ট’ হয়!
৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ অনুসরণ করেন শুভশ্রীকে। ইনস্টাগ্রামের নিরিখে এর চেয়ে লোভনীয় জীবন কারও হতেই পারে না! নিজের জীবনকে ঠিক যে ভাবে দেখতে চেয়েছিলেন নায়িকা সে ভাবেই পেয়েছেন। শুভশ্রী বললেন, “জীবনকে এ ভাবেই দেখতে চেয়েছিলাম, তাই কোনও দিন দিগ্‌ভ্রষ্ট হইনি। যে সময় যেটা করার, সেই সময় ঠিক সেটাই করেছি।” জীবনকে জটিল করে দেখা বা ভাবা মোটেও পছন্দ নয় তাঁর। শুভশ্রী মনে করেন, জীবনকে যত সহজ করে দেখা যায় তত সুবিধা। অনেকে বুঝতে পারেন না তাঁরা জীবনের কাছে ঠিক কী চান। এ ক্ষেত্রে বাকিদের থেকে নায়িকা একেবারে আলাদা। অভিনেত্রী বলেন, “জীবনে অনেক কিছু একসঙ্গে আমি চাইনি। খুব অল্প জিনিস চেয়েছি। আর যেটুকু পেয়েছি তা যত্ন করে রাখার চেষ্টা করেছি। তাই হয়তো সুবিধা হয়েছে।” খারাপ, ভাল নিয়েই জীবন। ভবগানের কাছে তাই তিনি সব সময় কৃতজ্ঞ।



শুভশ্রী থেকে তিতলি হয়ে ওঠার যাত্রা
বিয়ে করা মানেই নায়িকাদের কেরিয়ার শেষ! কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই ধারণা গেঁথে গিয়েছিল সকলের মনে। আর নায়িকাদের সন্তান হয়ে যাওয়া মানে তো সব শেষ। সেই সংজ্ঞা বদলে গিয়েছে। শুভশ্রী বললেন, “অনেকে বলেন কেন অভিনয় জীবনের মধ্যগগনে আমি মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম! আমার মনে হয় আমি যখন যেটা চেয়েছি তখন সেটাই করেছি। কারণ, জীবনকে এ ভাবেই দেখতে চেয়েছিলাম আমি।” রাত পোহালেই তিতলি হয়ে দর্শকের সামনে ধরা দেবেন অভিনেত্রী। ছবির নাম ‘গৃহপ্রবেশ’। পরিচালনার দায়িত্বে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। পরিচালেক আগের ছবিতেও অন্য ভাবে দেখা গিয়েছিল নায়িকাকে। শুভশ্রী বললেন, “ইন্দ্রদীপদা যে আমায় খুব ভালবাসেন সেটা আমি জানি। তিতলিকে আমার জন্যই লিখেছিলেন।” পর্দায় প্রথম বার জুটিতে জীতু-শুভশ্রী। নায়িকা যোগ করলেন, “তিতলি বললেই জানি ঋতুদার (ঋতুপর্ণ ঘোষ) কথা মনে পড়ে যায় অনেকের। নামটাই এমন। এই গল্পে কোনও জটিলতা নেই। জীতুর সঙ্গে সমীকরণও একেবারে অন্য। প্রেম, বন্ধুত্ব কিছুই খোলসা করা যাবে না।”

ইউভান, ইয়ালিনির চোখে মা শুভশ্রী
বাড়িতে ফিরলেই তিনি এক অন্য মানুষ হয়ে যান। কিন্তু এই পর্বান্তর কি সারা ক্ষণ সম্ভব? শুভশ্রী বললেন, "তাঁর দুই সন্তান— ইউভান আর ইয়ালিনি। দু’জনেই এখন একটু বড় হয়েছে। টেলিভিশনে দেখলে বা বইয়ের পাতায় মায়ের ছবি দেখলে তারা বুঝতে পারছে। ইয়ালিনি মাঝে মাঝে অবাক হয়। নায়িকা বললেন, “আমার ছবি দেখলেই মা-মা বলে ওঠে।” এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলি নায়িকাকে এগিয়ে যাওয়ার আরও শক্তি যোগায়। পরিচালক কাট বললেই কি সেই চরিত্র থেকে সহজে বেরিয়ে নিজের সত্তায় ফেরা সম্ভব হয়? নায়িকা বললেন, “ক্যামেরার সামনের শুভশ্রীকে বাইরে রেখেই বাড়িতে আসি। কিন্তু সব সময় যে তা সম্ভব হয় তা নয়। সে ক্ষেত্রে আমার পরিবার আমায় অনেক সাহায্য করে।”



ফিরে দেখা শুভশ্রী
হিট, ফ্লপ, সুখ, দুঃখ, আনন্দ— এমন অনেক মুহূর্ত কাটিয়েছেন। নায়িকা মনে করেন, ১০ বছর আগের শুভশ্রী আর বর্তমান শুভশ্রীর মধ্যে মিল খুঁজতে চাইলে বেশ ফাঁপরে পড়তে হবে। ছবির ভাষা বদলেছে। এককালে আদ্যোপান্ত বাণিজ্যিক ঘরানার নায়িকা ছিলেন। এখন পর্দায় অন্য ধরনের গল্প বলতে চাইছেন। এক দিকে ‘গৃহপ্রবেশ’-এর মতো ছবি মুক্তির উত্তেজনা। তার সঙ্গে উপরি পাওনা ‘ধূমকেতু’ মুক্তি। পরিণত শুভশ্রী ১০ বছর আগের শুভশ্রীকে কি কিছু বলতে চান? নায়িকা বললেন, “কী বাচ্চা ছিলাম না! ১০ বছরের পুরনো শুভশ্রীর সঙ্গে দেখা হলে বলব, তুমি অসাধারণ কাজ করেছ।”

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বগুড়া সদর থানায় পুলিশের কাছ থেকে ১০ রাউন্ড গুলি উধাও Dec 15, 2025
img
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ Dec 15, 2025
img
পুলিশের পোশাকে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় বক্তব্য দেওয়ায় এএসআই বরখাস্ত Dec 15, 2025
img
ডিসেম্বরের ১৩ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি দেশের ১০ ব্যাংকে Dec 15, 2025
img
কলম্বিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৭ জনের, আহত ২০ Dec 15, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারদর Dec 15, 2025
img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025