যেখানে বলিউডে আলোচনায় থাকার জন্য প্রতিদিন নতুন শিরোনাম তৈরির প্রতিযোগিতা, সেখানে ইয়ামি গৌতম যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক রাস্তায় হাঁটছেন। ধীরে কিন্তু স্থির পদক্ষেপে তিনি হয়ে উঠেছেন সমসাময়িক বলিউডের এক নির্ভরযোগ্য ও শৃঙ্খলাপরায়ণ অভিনেত্রী। তাঁর কাছে মুখ্য নয় গ্ল্যামার বা লাইমলাইট — বরং তিনি বিশ্বাস করেন গল্পের পরিপূর্ণতা, চরিত্রের গভীরতা এবং নির্মাণের প্রতি একাগ্রতায়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামি জানালেন, তাঁর কাছে স্ক্রিপ্টই মূল নায়ক। তিনি বলেন, "আমি প্রধান চরিত্রে আছি কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ছবিটি সফল হবে কি না, তা নির্ভর করে গল্পের উপর।" আর সেই কারণেই তিনি কখনোই কেবল মুখে বলা ‘ন্যারেশন’ শুনে কাজ গ্রহণ করেন না। পুরো স্ক্রিপ্ট নিজে পড়ে, চরিত্র বিশ্লেষণ করে তবে তিনি সিদ্ধান্ত নেন।
এই স্বচ্ছতা শুধু কথায় নয়, তার কাজে প্রতিফলিত হয় স্পষ্টভাবে। ‘ভিকি ডোনার’, ‘বালা’, ‘উরি’, ‘এ থার্সডে’, ‘লস্ট’ — একের পর এক ছবিতে তিনি যে রূপান্তর দেখিয়েছেন, তা আর বলিউডের সাধারণ নায়িকাদের ঘরানায় পড়ে না। প্রতিটি চরিত্রে যামির রয়েছে আলাদা রং, আলাদা অন্তর্দৃষ্টি।
শুটিং চলাকালীন তিনি নিজেকে প্রযুক্তির যাবতীয় বিভ্রান্তি থেকে দূরে রাখেন, অপ্রয়োজনীয় মোবাইল অ্যাপ মুছে ফেলেন, চরিত্রে প্রবেশ করেন মনপ্রাণ ঢেলে। আর সেই নিবেদনই তার অভিনয়ে নিয়ে আসে একটি বিশুদ্ধ আবেগ, যা কৃত্রিমতা নয় — বরং বাস্তবতার ছায়া।
যখন অনেকেই বলিউডে আকাশচুম্বী প্রচারণা আর ভারী সংলাপ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চান, তখন ইয়ামি গৌতম নিজের মতো করেই তৈরি করছেন এক শান্ত অথচ গভীর সত্তা। তিনি যেন নিজের মধ্যে এক বিপ্লব বইয়ে দিয়েছেন — শব্দের নয়, গঠনের; বাহারের নয়, ভেতরের।
তাঁর পথ সহজ নয়, তবে প্রতিটি পদক্ষেপ এক সুসংগঠিত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি। হয়তো তাঁকেই বলা যায় — গল্পের প্রতি একনিষ্ঠ শ্রদ্ধায় বলিউডের নতুন মানদণ্ড।
পিএ/এসএন