ইরানে মোসাদ সংশ্লিষ্ট ৫০ এজেন্ট আটক

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে অভিযান চালায় ইরান। এতে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫০ জনের বেশি এজেন্ট আটক হয়েছেন বলে দাবি করেছে দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। মেহের নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অভিযানের সময় দুজন নিহতও হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক বিবৃতিতে আইআরজিসির স্থলবাহিনীর কুদস ঘাঁটি জানিয়েছে, ইসরায়েলপন্থি ‘সন্ত্রাসী ও ভাড়াটে গোষ্ঠীগুলোর’ বিরুদ্ধে কয়েক দফায় পরিচালিত অভিযানে এসব ব্যক্তি আটক হন। এ ছাড়া, আটককৃতদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে।

আইআরজিসি জানায়, ধৃত ব্যক্তিরা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোতে হামলার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল। গোটা অভিযানটি দুই সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

প্রদেশটি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অঞ্চলটিতে দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর সক্রিয়তা রয়েছে। ইরান বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, এই অঞ্চলকে ব্যবহার করে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ দেশের ভেতরে নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

আইআরজিসি আরও দাবি করে, এই অভিযানের মাধ্যমে মোসাদের একটি বড় নাশকতা পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। তারা জানায়, ইসরায়েল এ অঞ্চলে সামরিক তথ্য চুরি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করার জন্য স্থানীয়দের অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ করছিল।

তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান সরকারের এমন ঘোষণার পেছনে কৌশলগত বার্তা রয়েছে। এটি যেমন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা প্রদর্শনের ইঙ্গিত, তেমনি আন্তর্জাতিক মহলকে জানিয়ে দেওয়া—দেশের ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রম করে কোনো হস্তক্ষেপই বরদাশত করা হবে না।

আটক ব্যক্তিদের পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

অনলাইনে সালাম দিলে কীভাবে উত্তর দেবেন? | ইসলামিক জ্ঞান Jul 05, 2025
img
কীর্তির প্রত্যাবর্তনের বড় পরিকল্পনা, ফিরছেন ৫টি বড় প্রজেক্টে Jul 05, 2025
img
সিরিজ বাঁচাতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ, যেমন হতে পারে একাদশ Jul 05, 2025
img
সবাইকেই ট্রানজিশন পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, বাংলাদেশের পারফরমেন্স প্রসঙ্গে জয়সুরিয়া Jul 05, 2025
img
বাবার দ্বিতীয় বিয়ের খবরে ক্ষুব্ধ সানি, তেড়ে যান হেমা মালিনীর দিকে! Jul 05, 2025
img
১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হারানোর মুখে সাইফ আলি খান Jul 05, 2025
img
‘দ্য ট্রেইটার্স ইন্ডিয়া’র মঞ্চে উরফি জাভেদ ও নিকিতার জয় Jul 05, 2025
img
আগে পিওনের ৪০০ কোটি টাকা বানাতে লেগেছে ১৫ বছর কিন্তু এখন লাগে ৩ মাস : রুমিন ফারহানা Jul 05, 2025
img
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণরা নতুন সমাজ গড়বে : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা Jul 05, 2025
img
ক্লাব বিশ্বকাপে আল হিলালকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স Jul 05, 2025
img
‘বাবা আমাকে সাহায্য করেনি’, অভিনয় জীবন নিয়ে মিঠুন পুত্রের আক্ষেপ Jul 05, 2025
img
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল সোনার দাম Jul 05, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৬৫ হাজার ৫৭৩ হাজি Jul 05, 2025
img
‘আমি পাঁচ বছরের মধ্যে বিয়ে করে মা হতে চাই’, জায়েদ খানকে তিশা Jul 05, 2025
img
রোমে পেট্রোল স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ৪৫ Jul 05, 2025
img
চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিলে আতশবাজি-অস্ত্র নিষিদ্ধ করল সিএমপি Jul 05, 2025
img
উড্ডয়নের আগেই অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট Jul 05, 2025
img
আমরা যেনতেন নির্বাচন চাই না : জামায়াত আমির Jul 05, 2025
img
এ কে আজাদের বাসভবনে হামলা, ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা Jul 05, 2025
img
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা Jul 05, 2025