রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগ নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়ে ওঠে দেশবাসী। চলছে প্রতিবাদ।
সোশ্যাল মিডিয়াও উত্তাল এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
সোহাগ হত্যা ইস্যুতে সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উপদেষ্টার পোস্টের স্ক্রিনশট নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করেন নির্মাতা আশফাক নিপুণ।
ইতোমধ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেক তারকা। নির্মাতা আশফাক নিপুণও জানিয়েছেন প্রতিবাদ। এবার ফের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্ট নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করলেন নিপুণ। গতকাল শনিবার ওই পোস্টে উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে নিপুণ লেখেন, ‘আপনার মতো তরুণদের দিকে আমার মতো পুরো দেশ তাকিয়ে আছে।
এসব চাঁদাবাজি, দখলবাজি, জের ধরে খুনোখুনি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় আপনার সরকারের ওপরেও বর্তায়। দায় না নিয়ে হাসান মাহমুদের মতো দায় চাপানোর চটকদার রাজনীতি আমরা নতুন কোনো সরকারের ভেতর আর দেখতে চাই না।’
আশফাক নিপুণের করা পোস্ট চোখ এড়ায়নি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার। নির্মাতার পোস্টের প্রায় এক ঘণ্টা পর ওই পোস্টে মন্তব্য করলেন আসিফ মাহমুদ। মন্তব্যের ঘরে আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘কঠোর হস্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি নিপুণ ভাই।
এরপর উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘মুরাদনগরে হাতেনাতে ধরার পর চাঁদাবাজকে ছাড়াতে থানায় হামলা করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ৩ ঘণ্টার হামলায় ভাঙচুর, পুলিশসহ সিভিলিয়ান আহত হয়। কুমিল্লা থেকে এডিশনাল ফোর্স আর যৌথ বাহিনী এসে থানা রক্ষা করে। পুলিশবাদী মামলা হয়। স্থানীয় পুলিশকে কঠোর হতে নির্দেশ দিই। সে ঘটনায় ৭ জন গ্রেপ্তার হয় (যদিও মাসখানেকের মধ্যেই জামিন হয়ে যায়)।’
আসিফ মাহমুদ আরো লেখেন, ‘তো এই কঠোর হওয়ার অপরাধে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে দলটির একজন উচ্চ পর্যায়ের নেতা আমার নামে অভিযোগ করে যে আমার যন্ত্রণায় নাকি মুরাদনগরের বিএনপির লোকেরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আরো মুশকিল হলো আমাদের এই সরকারের সবাই তো বিপ্লবী না, কঠোর হওয়াটাও মাঝেমধ্যে একরকম অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার গুরুদায়িত্বও যেন একমাত্র সরকারেরই।’
সর্বশেষে উপদেষ্টা লেখেন, ‘মিডিয়ায় এসে বলবে ইন্টেরিম ব্যবস্থা নেয় না কেন আর অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সন্ত্রাসীদের ইমিউনিটি দেবে। সন্ত্রাসীরা উচ্চ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আইন-শৃঙ্খলা ভালো হবে কিভাবে? আর এই প্রশাসনযন্ত্রের ৫-১০% লোক ছাড়া বাকি সব চরিত্রগত ভাবে ক্ষমতার গোলাম। এই সরকার আর কদিন।’
গত বুধবার বিকেলে একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামে এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেই ঘটনার একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদা না পেয়ে প্রকাশ্য এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর পেছনে বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মী রয়েছেন। ইতিমধ্যে যুবদল অভিযুক্তদের বহিষ্কার করেছে। পুলিশ প্রধান আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এসএন